Breaking News

আওয়ামী লীগ ছেড়ে স্বর্ণের নৌকা উপহার দিয়ে নিক্সনের সঙ্গে যোগ দিলেন নৌকা মনোনীত প্রার্থী!

চরভদ্রাসনে উপজেলা উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) চেয়ারম্যান মো. কাউসার হোসেন স্বর্ণের নৌকা উপহার দিয়ে ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে নিক্সন চৌধুরীর বাড়ি ভাঙ্গার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামে এ যোগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়।
যোগদান সম্পর্কিত অনুষ্ঠানের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘জনাব মুজিবর রহমান নিক্সন চৌধুরী এমপির প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করে চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক ও চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত  (নৌকা) প্রার্থী জনাব মো. কাউসারের যোগদান অনুষ্ঠান। প্রচারে চরভদ্রাসনে সর্বস্তরের জনগণ’।

ওই অনুষ্ঠানের শুরুতে বিকেলে ৫টার দিকে নিক্সন চৌধুরীর হাতে কাচের বাক্সে মোড়ানো দুই ভরি ওজনের স্বর্ণের নৌকা তুলে দেন মো. কাউসার।এছাড়া ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে নিক্সনের সঙ্গে যোগ দেন চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের সভাপতি মো. রুবেল মোল্লা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল মোল্লা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মৃধা।
উল্লেখ্য, গত বছর ২৩ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মুসার মৃত্যুর কারণে উপজেলার চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয়। গত ২৯ মার্চ এ উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।

ওই নির্বাচনের আগে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কাউসার হোসেনের নাম ঘোষণা দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ।
মহামারি করোনার কারণে ২৬ মার্চ ওই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে আগামী  ১০ অক্টোবর এ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করে নির্বাচন কমিশন।

এ নির্বাচন ঘিরে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ঘটতে শুরু করে নাটকীয় ঘটনা। স্বতন্ত্র সংসদ সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ার আলী মোল্লা আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাউসারের পক্ষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
এরপর নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে যোগ দিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাউসার শুক্রবার দুপুরে তার ব্রাহ্মণপাড়ার বাসভবনে আসেন। তিনি তার সমর্থকদের নিয়ে সেখানে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া করেন। পরে বিকেলে এ যোগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন।

ওই যোগদান অনুষ্ঠানে নিজের অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়ে মো. কাউসার হোসেন বলেন, আমি ইতিপূর্বে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহর বিশ্বস্ত হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছি। কিন্তু তিনি (কাজী জাফরউল্লাহ) মানুষের প্রতি সম্মান দেখাতে পারেন না। আমি ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে এ উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছি। কিন্তু নির্বাচনে জিততে পারিনি। এ নির্বাচনের আগে আমার উপলব্ধি হয়েছে স্বতন্ত্র সাংসদের সমর্থন ছাড়া এ নির্বাচনে জেতা সম্ভব নয়। তাই অনেক ভেবে-চিন্তে পরামর্শ করে আমি সংসদ সদস্যের (নিক্সন চৌধুরী) সঙ্গে দেখা করেছি এবং যোগদানের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখে হাসি ফোটাতে আমি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, এ যোগদান অনুষ্ঠান চরভদ্রাসনে করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সেখানে করা হলে তা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হতো। এ কারণে আমি সংসদ সদস্যের বাড়িতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।
‘যদি থাকে নসিবে আপনা-আপনি আসিবে’ এ গানে কলি আউড়ে  কাউসারকে স্বাগত জানিয়ে স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান নিক্সন বলেন, আমার ডান পাশে দেখেন, বাম পাশে দেখেন সবাই এখন আমার লোক। আমি দুইবার এ এলাকার সংসদ সদস্য হয়েছি, এলাকার উন্নয়নে যে পরিমাণ কাজ করেছি তা অতীতে হয়নি। তাই আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যোগ দিচ্ছেন।
মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেন, আমার শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আওয়ামী লীগের রক্ত। আজকে অনেক বিএনপি নেতাও আমার সঙ্গে জয় বাংলা স্লোগান  দেয়। এটি আমার প্রাপ্তি বলে মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘কাজী জাফরুল্লাহ গত ৬ মাসেও এলাকায় আসেননি। আমি কাজী জাফরুল্লাহর মতো নৌকা বাই না। আমি বঙ্গবন্ধুর নৌকা বাই। বিভিন্ন প্রতিকূলতা অতিক্রম করেই আমি এলাকাবাসীর জন্য কাজ করছি।’
তিনি তার সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ার আলী মোল্লার প্রতি সহমর্মিতা জানান কাউসারকে সমর্থন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য।
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি যে আমি নৌকার বিপক্ষে রাজনীতি করি না । আমি তিন থানার জনগণকে মুক্ত করার জন্য একজনের বিপক্ষে রাজনীতি করি। বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকদের বলে দিচ্ছি, এবার আমি নিক্সন চৌধুরী নৌকার প্রার্থীকে নিয়ে নামছি। নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী করে শেখ হাসিনাকে উপহার দেব ইনশা আল্লাহ’।
এ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, আনোয়ার মোল্লা প্রমুখ।

Check Also

ক্ষমা চাইলেন ডা. মুরাদ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাধারণ ক্ষমার আবেদন করেছেন সাবেক তথ্য ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *