Breaking News

কোনো অযুহাতেই পোশাক শ্রমিকদের ছাঁটাই করা যাবে না : মান্না

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যে বিজিএমইএ সভাপতির পোশাক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা এবং তার স্বপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন আমাকে বিস্মিত করেছে। কোনোভাবেই পোশাক শ্রমিকদের ছাঁটাই করা যাবে না এবং প্রত্যেক শ্রমিকের বকেয়া বেতন চলতি জুন মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে যে শ্রমিকদের শ্রমকে পুঁজি করে এই পোশাকশিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, সেই শ্রমিকদের এই আকালের দিনে কর্মহীন করা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’>শুক্রবার (৫ জুন) গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।মান্না বলেন, ‘বাংলাদেশের পোশাক খাতের কাঁচামাল প্রধানত আমদানি নির্ভর। অর্থাৎ আমরা পোশাক শিল্প থেকে যা আয় করি তা শুধুমাত্র পোশাক শ্রমিকদের শ্রমের মূল্য। কিছু অর্ডার বাতিল হয়েছে, সেই বাতিল অর্ডারের কিছু আবার ফিরেছে, হয়তো আরো ফিরবে। চলতি বছরে পোশাক শিল্পের আয় ২৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৩.১ বিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছিল, যার ২৬ শতাংশ এখন পর্যন্ত ফেরানো গেছে।’

তিনি বলেন, ‘এত বছর ধরে যে শ্রমিকদের শ্রম বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি অগ্রসর হয়েছে এবং মালিকেরা ধনী থেকে ধনকুবের হয়েছেন, সেই শ্রমিকদের এই মহামারির সময়ে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়ার তীব্র প্রতিবাদ এবং নিন্দা জ্ঞাপন করছি।’তিনি বলেন, ‘বিজিএমইএ সভাপতি নিজেই বলেছেন, এখনও ১৮ হাজার শ্রমিকের কয়েক মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তিনি এ-ও বলেছেন- শ্রমিকদের জন্য তহবিল গঠনের জন্য সরকারের সাথে বসা হবে। শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ কি যথেষ্ট ছিল না? সে বিষয়ে তো আপনারা কিছু বলছেন না। সরকারের সাথে বসে পোশাক শ্রমিকদের বিষয়ে গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিজিএমইএ-কে।’মান্না বলেন, ‘কোনভাবেই পোশাক শ্রমিকদের ছাঁটাই করা যাবে না এবং প্রত্যেক শ্রমিকের বকেয়া বেতন চলতি জুন মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। যারা ইতোমধ্যে চাকরি হারিয়েছেন, তাদের শ্রম আইন অনুযায়ী বেতন বা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের পুনঃনিয়োগের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর এই সকল বিষয়ে পোশাক কারখানা মালিকদের সহযোগিতা করার জন্য সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় পোশাক খাতের এই অস্থিরতা যে পরিস্থিতি তৈরি করবে তা সামাল দেয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিজিএমইএ সভাপতিকে ধন্যবাদ জানাই, শ্রমিকদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য এবং আশা করি স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শ্রমিকদের জীবিকার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সরকারের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধান করবেন।’

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুন) শ্রমিকদের জন্য করোনা ল্যাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে চলতি জুন মাস থেকেই গার্মেন্টসে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হবে বলে জানান বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক।তিনি বলেন, ‘পহেলা জুন থেকে শ্রমিকদের ছাঁটাই হবে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা। কিন্তু করার কিছু নেই। কারণ শতকরা ৫৫ শতাংশ ক্যাপাসিটিতে ফ্যাক্টরি চলছে। আমাদের ছাঁটাই ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। তবে এ ছাঁটাই শ্রমিকদের জন্য কি করা হবে; এ বিষয়ে সরকারের কথা বলছি কীভাবে এ সংকট মোকাবিলা করা যায়। তবে এ অবস্থা হঠাৎ করে বদলেও যেতে পারে। তখন ছাঁটাই শ্রমিকরাই কাজে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।’

Check Also

জুলুম থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

মহানবী (সা.) যেকোনো ধরনের জুলুম থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *