মহামারি করেনাকালে নিজের স্বার্থকে তুচ্ছ ভেবে দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন নরসিংদী সদরের এসিল্যান্ড শাহ আলম মিয়া। ঘরে বৃদ্ধা মা ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে রেখে কর্মহীন মানুষের জীবন-জীবিকা সুরক্ষার জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন উপজেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা। আর ১৬ দিন বাদেই তার স্ত্রীর সন্তান হবে, এ সময় দেখভালের জন্য স্ত্রীর পাশে স্বামীরই বেশিক্ষণ থাকার কথা।
কিন্তু সেই সময়টা ওই এসিল্যান্ড ব্যয় করছেন সাধারণ মানুষের মঙ্গলের স্বার্থে। সকাল থেকে রাত অবধি কখনো মানুষকে ঘরে ফেরানোর কার্যক্রম, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ, ভেজাল বিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, কখনো ত্রাণ বিতরণ, কখনো ‘করোনা’ আক্রান্ত রোগীর বাড়ি লকডাউন, হাসপাতালে নেয়া, খাওয়া-দাওয়া, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার দাফন ও সৎকার করা। এভাবেই অবিরাম ছুটে চলেছেন তিনি।
অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, বৃদ্ধা মাকে নিয়ে একই ছাদের নিচে থাকেন অথচ তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা হয় না, কথা হয় না। কারণ তিনি করোনা রোগীদের সংস্পর্শেই বেশিরভাগ সময় থাকেন। তাই তো নিজের মতো করে আলাদা রুমে থাকেন। খাবারের জিনিসপত্র, কাপড়-চোপড় সব কিছুই তার আলাদা।
তার স্ত্রী মাশরুহা জাহান আশা বলেন, এই সময় আমার স্বামী আমার পাশে নেই আমার খারাপ লাগার কথা আর খারাপ তো লাগেই। আবার যখন মনে হয় এই সংকটময় সময়ে আমার স্বামী দেশের মানুষের জন্য কাজ করছে তখন আর খারাপ লাগে না। আমি এবং আমার শাশুড়ি সব সময় তার জন্য দোয়া করি যেন সুস্থ থেকে মানুষের জন্য যেন কাজ করে যেতে পারে।
এ বিষয়ে শাহ আলম বলেন, আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর আদর্শের প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তোলা। এ নির্দেশনাটি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করে চলেছেন নরসিংদীর ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি, প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে। আমার জীবনের শেষ পর্যন্ত আমি চেষ্টা করব সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে।