বিক্ষোভ করায় এক চাকরিপ্রার্থীকে কামড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পরে ওই চাকরিপ্রার্থীসহ মোট ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আহত হয়েছেন দাবি করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কামড় দেওয়া পুলিশ সদস্য। গতকাল বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় এ ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, অরুণিমা পাল নামে এক চাকরিপ্রার্থী গতকাল অভিযোগ করেন, তার হাতে কামড়ে দিয়েছেন এক নারী পুলিশকর্মী। পুলিশ সেই অভিযোগ স্বীকার করে পাল্টা দাবি করে, ওই নারী পুলিশকর্মীর হাতেও কামড় দেওয়া হয়েছে। বুধবারের বিক্ষোভের ঘটনায় অরুণিমা-সহমোট ৩০ জন চাকরিপ্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ যাদের রিমান্ডে নিতে চাইছেন, তারা কি মাওবাদী? এর জবাবে সরকারি আইনজীবীরা পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভে পুলিশের কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন বলেই পুলিশ তাদের আটক করেছে।
শুনানি চলাকালীন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ইয়াসিন রহমান এবং অমিত হালদার কটাক্ষ করে বলেন, পুলিশ যাঁকে কামড় দিয়েছে, তিনি হাজতে। অথচ, যিনি কামড় দিয়েছেন, তিনি হাসপাতালে ভর্তি।
ইয়াসিন প্রশ্ন তোলেন, ‘সরকার চাকরি দিতে পারছে না। দুর্নীতি করে সবাই জেলে রয়েছেন। তারপরও পুলিশ বলছে, চাকরিপ্রার্থীদের সংগঠনকে খুঁজে বার করতে হবে। চাকরিপ্রার্থীরা কী মাওবাদী? কোনো যুক্তিতে তাদের রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে? চাকরিপ্রার্থীদের রিমান্ডে দেওয়া হলে সমাজের প্রতি অবিচার হবে।’
রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে উঠেছিল বলেই পুলিশকে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে। পুলিশের যা কর্তব্য, পুলিশ তা-ই করেছে। শিক্ষকরা শিক্ষকদের মতো আচরণ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু নিয়মভঙ্গ হয়েছে।’
চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীদের পাল্টা যুক্তি, আন্দোলনকারীরা হিংসাত্মক হয়ে উঠলে, তাদের হাতে লাঠি থাকত। তাদের কাছ থেকে কি সে রকম কোনো লাঠি পাওয়া গিয়েছে?
আইনজীবী অমিত হালদার বলেন, ‘কামড়াচ্ছে তো পুলিশ! রক্ষকই ভক্ষক হয়ে গিয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণই ছিল। পুলিশই আক্রমণাত্মক হয়ে লাঠিপেটা করেছে। চাকরিপ্রার্থীরা আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা তাদের জামিনের আবেদন করছি।’
শুনানি শেষে আদালতের বিচারক শৌনক মুখোপাধ্যায় গ্রেপ্তারকৃতদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।