আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বাংলাদেশে আর কখনই হাওয়া ভবন করতে দিব না। আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ জনগণের দল। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অস্ত্র জমা দিয়েছি, ট্রেনিং জমা দেইনি। প্রয়োজনে দেশবাসীকে নিয়ে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিব। স্বাধীনতা বিরোধীদের আবারও পরাজিত করবো।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকালে জাতীয় নেতা এম মনসুর আলী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও ৩ নভেম্বর উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলা পরিষদ মাঠে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেফাজ উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেড কেএম হোসেন আলী হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি বীর মুক্কিযোদ্ধা আবু উউসুফ সূর্য, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি প্রকৌশলী তানভির শাকিল জয়, পৌর মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদার, যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব, ছাত্রলীগের সভাপতি সায়েম তালুকদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করা হয়। পরে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। স্মরণ সভাটি রিতিমত জনসভায় রুপ নেয়। উপজেলা পরিষদের মাঠ ছাড়াও রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ দাড়িয়ে বক্তৃতা শোনেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বার বার চেষ্টা চালিয়েছে। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকে হত্যা করেছিল। পাকিস্তানের আর্মিরা যে গ্রেনেড ব্যবহার করে, ২১ আগস্ট সে গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছিল। রক্তের গঙ্গা বইয়েছিল ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। আমাদের নেত্রীকে লক্ষ্য করে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করেছে। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে? আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। এই দলকে কেউ নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি।
আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের হ্রদয়ের সংগঠন। এই সংগঠনকে জনগণ বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে দেবেন। আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা যাবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর আফগানিস্তান -পাকিস্তান বানাতে দেওয়া হবে না। জঙ্গিবাদ-বাংলা ভাইয়ের উত্থান হতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। তাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। এ জন্য স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, আজকে ১/১১। মির্জা ফখরুলরা গণতন্ত্রের কথা বলেন। কেন ১/১১ সৃষ্টি হলো? এর জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী না বিএনপি? মার্কিন রাষ্ট্রদূত- বলেছিলেন তারেক রহমানের কারণে- আজিজ মার্কা কমিশন করেছিলেন। গণতন্ত্র হত্যার জন্য বিএনপি দায়ি। ফখরুলের নেতা তারেক রহমান দায়ী। বিএনপি ভোট ডাকাতির কথা বলেন। ভোট ডাকাত বিএনপি। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হা না ভোট করে ভোট ডাকাতি করেছে। সেনা আইন ভঙ্গ করে রাষ্ট্রপ্রতি হয়েছে দল গঠন করেছেন। জনগণের তোরের মুখে বার বার পদত্যাগ করছেন। সেই দল বিএনপি। আজকের বিএনপির জন্য আন্দোলন করেন? বিএনপির বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির সংবাদ সম্মেলনে বললেন হাওয়া ভবনের কমিশনের কারনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। কানসাটের বিদুতের জন্য আন্দোলন করার কারনে মানুষকে হত্যা করেছিলেন। লজ্জা করে না? মানুষের এক কান কাটার মত কথা বলেন, এবার দেশের মানুষ দুই কান কেটে দেবে।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, স্বাধীনতার পর চারটি বড় সংকট হয়েছে। তারমধ্যে ৭৫”র ১৫ আগস্ট, ১/১১, করোনা মহামারি এবং বর্তমানে বিশ্ব যুদ্ধের কারনে সংকট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা বর্তমান সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। তিনি বলেন, বিএনপি ঘোষণা দিয়েছেন ১০ ডিসেম্বর পর নাকি বিএনপি দেশ পরিচালনা করবেন। তারা তো নিজেরাই চলতে পারে না। দেশ চালাবে কিভাবে? বিএনপি একটি ঝামেলা। তারা দেশ চালাবে কিভাবে? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে একটানা ক্ষমতায় থাকতে হবে।
প্রকৌশলী তানভির শাকিল জয় এমপি বলেন, ৩ নভেম্বর জেলহত্যা শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, এটা ছিল জাতির পিতার বাংলাদেশকে পিছনের দিকে ঢেলে দেওয়া। জাতীয় চার নেতা জেলখানায় প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন তারা ছিলেন জীবনে মরনে বঙ্গবন্ধুর সহচর।