রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় ভূমিহীন অসহায়দের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর দখলে নিতে সশস্ত্র হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত চারজন হয়েছেন।
আহতরা হলেন—উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের নোনামাটিয়াল এলাকার মৃত আব্দুল সালামের ছেলে আতাউর রহমান (২৭), আতাউরের মা ফাতেমা বেগম (৬০), ভাতিজা তৌহিদুল ইসলাম সজীব (২০) ও বড় ভাবি সুরমা (৩৬)।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের নোনামাটিয়াল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেওয়া এসব ঘর দখলে নিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে জানা যায়। হামলাকারীরা উপহারের ঘরের টিন ও সিমেন্টের খুটি খুলে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
হামলার ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন—জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল রশিদ, তার দুই ছেলে যুবলীগ নেতা ফারুক ও আশিক, আব্দুস ছাত্তারের ছেলে পাপুল, এলাহী বক্সের ছেলে মিঠুন এবং দেদার মন্ডলের ছেলে জালাল উদ্দিন। তারা সবাই স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, নোনামাটিয়াল এলাকার চার অসহায় পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে যাচাই-বাছাই করে তাদের ঘর বরাদ্দ দেন। পরিবারগুলোর জন্য সরকারি জায়গায় ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হলেও সেখানে রাস্তার জন্য বিপত্তি বাধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের।
ভুক্তভোগীদের দাবি, সরকারি জমির ওপর দিয়ে রাস্তা প্রশস্ত করতে থাকেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল রশিদ ও তার লোকজন। তাতে বাধা দিলে গত শুক্রবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ১০-১৫ জন ক্যাডার নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
হামলার শিকার আতাউর রহমান বলেন, বাড়ি ভেঙে রাস্তা নিতে চায় প্রভাবশালী চক্রটি। ইউএনও স্যার নিজে এসে জায়গা চূড়ান্ত করে আমাদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহৎ উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা এ হামলা চালিয়েছে। সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আমার হাত এবং আমার মায়ের দাঁত ভেঙে গেছে।
আতাউরের অভিযোগ, হামলাকারীরা ঘর ভাঙচুর করে বারান্দার টিন ও সিমেন্টের খুঁটি খুলে নিয়ে গেছেন। গুরুতর আহত হয়ে তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে হামলাকারীরা সেখানে গিয়েও হুমকি দিয়ে আসে।
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল রশিদ ওই ঘটনার অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তাদের ওপর হামলার অভিযোগ সঠিক নয়। বরং আতাউর আমাদের ছেলেদের ওপর হামলা করেছে।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, জমি-জায়গা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা বলেন, জমির সীমানা নিয়ে দুপক্ষের ঝামেলা হয়েছে। উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে মিমাংস করে দেওয়া হবে।