Breaking News

‘চাল-ডালের দাম যারা কমাতি পারবি তারাই দেশ চালাক’

সাতক্ষীরার গাবুরা ইউনিয়নের দিনমজুর আকছেদ আলী। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসারের খরচ চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিকার চেয়ে বিএনপির বিভাগীর গণসমাবেশে যোগ দিতে খুলনায় ছুটে এসেছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের এই দিনমজুর। ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রলারে চড়ে নদীপথে খুলনায় এসেছেন তিনি।

শনিবার সকালে নগরীর কয়লাঘাট এলাকায় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আকছেদ আলীর কথা হয়।সমকালের সঙ্গে আলাপকালে এই দিনমজুর জানান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পিষ্ট হওয়ার কথা। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটানো আকছেদ আলী আরও জানান, সন্তানদের খাবার কষ্ট আর মেনে নিতে পারছেন না। কিন্তু আকছেদ আলীও অসহায়। সীমাবদ্ধ আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া আকছেদ আলীর দাবি, দ্রব্যমূল্য কমুক। সেই দাবির পক্ষে নিজের অবস্থান জানান দিতেই সমাবেশে এসেছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সারারাত ট্রলারের মধ্যি স্লোগান দিছি। এই স্লোগান দেশবাসীকে জানান দিতি সমাবেশে আইছি। ছাওয়াল মাইয়েগের খাওয়ার কষ্ট আর সহ্যি করতি পারিনে। আমরা চাই, চাল-ডালের দাম কমুক। যারা এইডা করতি পারবি দেশ তারা চালাক। আমরা খাবার কষ্ট থেইকে মুক্তি চাই।

একই দাবিতে সমাবেশে এসেছেন পাইকগাছার গড়াইখালি গ্রামের ভ্যানচালক আবুল কাশেম । তিনি বলেন, চাল-ডালের দাম কমানোর দাবি জানাতে এসেছি। অনেকদিন ধরে ভ্যানে বসা যাত্রীদের কাছে দাম কমানোর কথা বলেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাই সরকারের কাছে এ দাবি জানাতে সবার সঙ্গে সমাবেশে এসেছি।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, আজ শনিবার নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরুর কথা রয়েছে। সমাবেশের আগে খুলনায় দু’দিনের ধর্মঘট ডেকেছেন জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি এবং মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। নছিমন-করিমন-ভটভটিসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধের দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তারা।

বাসের পাশাপাশি খুলনায় লঞ্চ, ট্রলার, এমনকি ফেরি চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব বাঁধা উপেক্ষা করেও সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর কয়লাঘাট থেকে ৫ নম্বর ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকায় ট্রলার বাঁধা রয়েছে। এসব ট্রলারে করে গভীর রাতে আশপাশের উপজেলা থেকে হাজার হাজার কর্মী সমর্থক সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন। রাতভর ট্রলারেই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন তারা। তাদের প্রত্যেকের কাছে রয়েছে শুকনা খাবার ও পানির বোতল। এসব কর্মী সমর্থকদের বেশির ভাগই শ্রমজীবী। আবার সেই দলে ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন।

সড়ক পথে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় নদী পথে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার দূরবর্তী কয়রা উপজেলা থেকে খুলনায় এসেছেন মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান। ৩০টি ট্রলারযোগে কয়রা থেকে প্রায় সাত হাজার লোক এসেছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার রাত ২টার দিকে তাদের ট্রলার খুলনা নগরীর ৫ নম্বর ঘাটে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে বেলা দুইটায় সমাবেশে যোগ দেবেন তারা।

আব্দুর রহমান বলেন, সব জিনিষের দাম বাইড়ে যাওয়ায় খাবার কষ্টে আছি। এর মধ্যি মাসে কয়েকবার মামলার হাজিরা দিতি শহরে আসতি হয়। এসব কষ্টের কথা জানান দিতি সমাবেশে আসিছি। যদি প্রতিকার পাই।

Check Also

কন্যার ছিন্নভিন্ন দেহ কুড়াচ্ছিলেন মা

অনেক সাধনা। দীর্ঘ প্রতীক্ষা। সংসার পাতার আট বছর পর গিয়াস-রাবেয়া দম্পতির ঘরে জ্যোতি ছড়ায় রায়সা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *