Breaking News

পরস্পর বিরোধী অবস্থানে আওয়ামী লীগের নেতারা

আওয়ামী লীগের নেতারা স্ববিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রাখছেন। একজন নেতা আজ যে কথা বলছেন পরদিন আরেকজন নেতা তা পাল্টে দিয়ে অন্য কথা বলছেন। এরকম উদাহরণ অনেকগুলো হয়েছে। গত সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি জনসভা নিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বক্তব্য এবং দলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা বেশ সরগরম হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামে বিএনপি জনসভাকে ‘ফ্লপ জনসভা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তিনি বলেছেন যে, জনসভার স্থানের একটি বড় অংশ খালি ছিলো। এই জনসভায় লোক সমাগম তেমন কিছু হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ফ্লপ নয়। সেখানে ১ লাখের মত জনসমাগম হয়েছে। তিনি এটাও বলেছেন বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে লোক সমাগম নিয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা সঠিক তথ্য তুলে ধরছেন না। বিএনপি গত কয়েক বছর যেভাবে লোক সমাগম করেছে সে তুলনায় এটিকে ফ্লপ বলা আমার মনে হয় না সঠিক হয়েছে। তবুও আমি বলি তারা শান্তিপূর্ণ থাকবেন।

আজ দুপুরে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পরিবহণ ও মহানগর বিভাগের অধীনে দপ্তর এবং সংস্থা প্রধানদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, সমাবেশের লোক দেখে আমরা ভয় পাই না। তারা যত লোক টার্গেট করে তত লোক কি হবে? অনেকে অনেক কথা বলছেন। ৩০,৩৫ বা ৫০ হাজার লোক হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে টেলিফোনে বলেছি লাখের কাছে লোক হয়েছে। সত্যকে আড়াল করে লাভ নেই। সত্যকে আড়াল করবো কেন ? এটা আওয়ামী লীগের বহুলোক স্বীকার করতে চাইবে না। বলবে ২৫ থেকে ৩০ হাজার লোক হয়েছে। বিএনপি জনসভার লোক নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে এই কথার বাহাস কেন? এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

কয়দিন আগেই কৃষিমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন, ভোটে যদি হেরে যাই তাহলে পরে আমরা স্যালুট করে ক্ষমতা ছেড়ে দিবো। আর অন্যদিকে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগকে হারানোর মত শক্তি বিএনপির নেই। তিনি এটিও বলেছেন যে, শেখ হাসিনা অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং অবাধ সুষ্ঠ নিরেপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের বিজয় অবশ্যই হবে। একজন নেতা যখন আওয়ামী লীগের নিশ্চিত বিজয়ের কথা বলছেন, তখন আরেক নেতা কিভাবে হারলে স্যালুট করে ছেড়ে দিবেন এমন কথা বলছেন? আওয়ামী লীগের কর্মীরা এতে বিব্রত। তারা বলছেন যে, নেতারা অভিন্ন সুরে কথা বলতে চাচ্ছেন না। একেক ইস্যুতে একেক রকম কথা বলছেন। আগে সরকারের মধ্যে এরকম পরস্পর বিরোধী বক্তব্য ছিলো। এখন এটি সংক্রমিত হয়েছে দলের মধ্যেও।

দলের রাজনৈতিক ইস্যুতে নেতাদের বক্তব্য পরস্পর বিরোধী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বলছেন যে, বিরোধী দল যদি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে তাহলে সেটাতে বাঁধা দেওয়া হবে না। তখন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বিএনপিকে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করছেন। কদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করলেন যে, বিরোধী দলের কাজ হলো আন্দোলন করা। অর্থাৎ, কৌশলগতভাবে বিরোধী দলের আন্দোলনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব জানালেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই এখন বলছেন যে, বিএনপি আন্দোলনের নামে নানা রকম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ মহল মনে করছেন যে, সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনার অভাবের কারণে আওয়ামী লীগের মধ্যে এই অস্থিরতা এবং পরস্পর বিরোধী বক্তব্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে আওয়ামী লীগকে খুব শিগগির ফিরে আসতে হবে। বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলা করা বা বিরোধী দলের সাথে রাজনীতির মাঠে লড়াইয়ের জন্য আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ যেমন হতে হবে তেমনি অভিন্ন সুরে কথা বলতে হবে।

Check Also

ক্ষমা চাইলেন ডা. মুরাদ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাধারণ ক্ষমার আবেদন করেছেন সাবেক তথ্য ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *