দেশে বর্তমান মূল্যস্ফীতির তথ্য না জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, চলতি বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি অনেক বাড়লেও সেপ্টেম্বরে তা কমে এসেছে।তিনি আরও বলেছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
সোমবার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতষ্ঠানে (বিআইডিএস) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মূল্যস্ফীতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের জন্য ভালো সংবাদ আছে। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া বাগে এসেছে এই মাসে। সবাই আমাদের কাছে ফোন করে জানার জন্য। গত মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল।
‘এই মাসে নেমেছে এবং ভালোভাবে নেমেছে। আমি যদিও অর্থনীতিবিদ নই, তবুও আমি বলছি আগামী মাসে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে।’
মূল্যস্ফীতি কমার কারণ ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, ‘কেন কমেছে? কারণ আমাদের সরকারের কৌশলগত ব্যবস্থা। তেলের দাম বেড়েছিল, কিন্তু এখন কমেছে। কারণ এক কোটি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। সেখানে কম দমে বিক্রি হচ্ছে চাল, তেল।
‘ফলে আমরা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরাসরি আঘাত করতে পেরেছি। ফলে দাম কমে এসেছে। শুধু কমেনি; ভালো কমেছে। বিশ্ববাজারেও কমেছে। কয়েক দিনের মধ্যে আপনারা মূল্যস্ফীতির পুরোটা তথ্য পেয়ে যাবেন।’
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বড় ধরনের মূল্যস্ফীতি দেখেছে জনগণ। চলতি বছরের জুনে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয় ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পরের মাসে সেটি কমে হয় ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, তবে আগস্টের তথ্য এখনও প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিবিএস যে জনশুমারি ও গৃহগণনা করেছে, তার প্রাথমিক ফলের ওপর শুমারি-পরবর্তী যাচাই করবে বিআইডিএস।
আগামী ১০ থেকে ১৬ অক্টোবর সারা দেশে জনশুমারি ও গৃহগণনার পরবর্তী যাচাই (পিইসি) জরিপ হবে।
রাজধানীর আগরগাঁওয়ে বিআইডিএসের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। গেস্ট অফ অনার ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন ও বিবিএসের মহাপরিচালক মতিউর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। বক্তব্য দেন জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের পরিচালক দিলদার হোসেন ও পিইসি কার্যক্রমের সমন্বয়কারী ড. ইউনূস।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ট্যাবের মাধ্যমে কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড পারসোনাল ইন্টারভিউইং (সিএপিআই) পদ্ধতিতে পিইসি করা হবে। ৯ অক্টোবর রাত ১২টা ১ মিনিটে নির্ধারিত এলাকায় থাকা সব দেশি-বিদেশি নাগরিককে গণনার আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া ছয় মাসের কম সময়ের জন্য সাময়িকভাবে বিদেশে অবস্থান করা নির্দিষ্ট এলাকার সব বাংলাদেশি নাগরিককে ফের গণনা করা হবে।
পরে নতুন তথ্যের সঙ্গে আগে পাওয়া শুমারির তথ্য মিলিয়ে দেখে বলা যাবে শুমারিতে কতটা ভুল কিংবা ত্রুটি হয়েছে। তার পরই তথ্য সমন্বয় করে জনশুমারির মূল প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও বিবিএস একটি ভালো শুমারি করেছে। এখন সেটির পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিবিএসকে আরও একটু স্বাধীনতা দেয়া উচিত।
‘ভারতে পরিসংখ্যান সংস্থা যেভাবে স্বাধীনতা ভোগ করে, বাংলাদেশে সেটি হচ্ছে না। পরিসংখ্যান ব্যুরোকে আরও হালনাগাদ তথ্য দিতে হবে।’