Breaking News

শোভন-রাব্বানীর মতো শেষ পরিণতি হচ্ছে জয়-লেখকের?

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে মেয়াদ পূরর্ণের আগেই পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন ছাত্রলীগ নেতা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানী। এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সিদ্ধান্তে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আল নাহিয়ান খান জয় এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লেখক ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

৩ মাস ভারপ্রাপ্ত থাকার পর ২০২০ সালে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ভারমুক্ত হন তারা। সংকটময় একটি সময়ে দায়িত্ব নিয়ে কতটুকু সংকট মুক্ত করতে পেরেছে তারা সেটাই এখন নানা মহলে আলোচিত হচ্ছে। বিগত কয়েক মাসে ছাত্রলীগ যেভাবে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে তাতে বারবার সামনে আসছে শোভন-রাব্বানীর মতোই শেষ পরিণতি হতে যাচ্ছে জয়-লেখকের।
জয়-লেখকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ দেখা যাচ্ছে যে, শোভন-রাব্বানীর চেয়ে কোনো অংশে কম নয় জয়-লেখক জুটি। অভিযোগ পাহাড় গড়ে আছে তাদের বিরুদ্ধে। বর্তমান কমিটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ নেতাকর্মী জয়-লেখকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে সংগঠনের গঠনতন্ত্র ভঙ্গের। অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই মাস পরপর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাধারণ সভা হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান কমিটির পুরো তিন বছর মেয়াদে সভা হয়েছে মাত্র একটি। সাধারণ সভা না হওয়ায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদও অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

জয়-লেখক এখন পর্যন্ত যে সমস্ত কমিটি দিয়েছে সেগুলোর ৯০ শতাংশ কমিটিতেই দুর্বল নেতৃত্বেএসেছে বলে অভিযোগ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরই। যে কমিটিগুলো হচ্ছে, সেগুলোতে অনৈতিক লেনদেন হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। এছাড়াও কমিটিগুলোতে অছাত্র, বিবাহিত, বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সদস্য, মাদক ব্যবসায়ী ও চিহ্নিত অপরাধীদের স্থান দিয়েছেন। প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কমিটি করছেন। যা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আমানতের খেয়ানত। নেতৃত্বে আসার পর থেকেই তারা বিলাসী জীবনযাপন শুরু করেন, হল ছেড়ে দুটি অভিজাত অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস শুরু করেন, তাদের একাধিক গাড়ি ব্যবহার ইত্যাদি নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। যে সমস্ত অভিযোগ ছিল শোভন-রাব্বানীর ক্ষেত্রেও।

ছাত্রলীগের এমন অভিযোগ নজর এড়ায়নি সংগঠনটির অভিভাবক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে এক যৌথসভা বিতর্কিত ও শিবির নেতাকর্মীদের ছাত্রলীগের জেলার দায়িত্বে আনার বিষয়ে সভায় ওবায়দুল কাদের চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এজন্য তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ভর্ৎসনা করেন। ছাত্রলীগ সম্পর্কে গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের বিষয় উল্লেখ করে এ সংগঠনের দুই নেতার কাছে কৈফিয়তও চান তিনি।

এরপর সপ্তাহ খানেক পরই গত শনিবার মধ্যরাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কোন্দল। ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়। সেখানকার অভ্যন্তরীণ কোন্দেল এবং সিট বাণিজ্যের ধারাবাহিক ফল হলো গত দুই দিনের ঘটনা। ফলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হিসেবে দায় পড়ছে জয়-লেখকের ওপরে। প্রশ্ন উঠছে তাদের নেতৃত্ব এবং সংগঠন পরিচালনা দক্ষতা নিয়ে। দেশজুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। ইডেনের কলেজের গত দুই দিনের ঘটনায় নাখোশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। আলোচনায় ছাড়িয়ে গেছে শোভন-রাব্বানীর চাঁদাবাজির আলোচনাকেও। ফলে শোভন-রাব্বানীর মতো শেষ পরিণতি জয়-লেখকের হবে কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত পরিণতি কি হয় সেটাই এখন দেখা বিষয়।

Check Also

‘কিছু কিছু বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রোগী ভাড়া করে রাখে’

কিছু কিছু বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রোগী ভাড়া করে রাখে বলে গণমাধ্যমের সামনে দাবি করেছেন আশুলিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *