গত মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ।
এতে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নবগঠিত কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামসহ ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। ভিডিও ফুটেজ ও ছবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ারকে হামলায় নেতৃত্ব দিতে দেখা গেলেও হামলার ঘটনাকে ‘ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ’ বলে আখ্যা দিয়েছে ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবারের হামলার ঘটনার বিষয়ে ‘বস্তুনিষ্ঠভাবে’ জানতে ঘটনার পরই প্রক্টরকে চার কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছিলেন উপাচার্য। তিনি এখন সে প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছেন। তবে প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এ বিষয়ে উপাচার্য স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেখা যাক।
প্রতিবেদন এলে তখন এটা বলতে পারব।’ অবশ্য মঙ্গলবারের হামলার বিষয়ে কিছু বলেননি উপাচার্য। তবে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে ওঠা সহাবস্থানের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটি খুবই প্রশংসনীয়, সর্বোত্তম বক্তব্য ও উদ্যোগ। একে আমরা স্বাগত জানাই। সবাই যেন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দর্শনটি ধারণ করেন, সে অনুরোধ করব।’
ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষ ‘নানা পদক্ষেপ’ নিয়েছে এবং নিচ্ছে বলে দাবি করেন প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সহাবস্থান আমাদের সবারই লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করি। শিক্ষার পরিবেশ সমুন্নত রাখতে আমরাও যেকোনো সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছি। এ ক্ষেত্রে কারও কোনো ভালো পরামর্শ থাকলে সেটি দেওয়ার জন্যও আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
ছাত্রদলের ভাবনায় আইনগত ব্যবস্থা
মঙ্গলবারের হামলায় আহত ছাত্রদলের ১৫ নেতা-কর্মীর মধ্যে ৭ জন এখনো ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় গেছেন। গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের মাথা ফেটেছে। তাঁর মাথায় সাতটি সেলাই পড়েছে।
আরিফুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি এবং হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভাবনায় রয়েছে।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ বেলা তিনটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্র সমাবেশ করবে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।