মুন্সিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত ও বিদেশে অবস্থানরত নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সংঘর্ষে নিহত যুবদল কর্মী শহীদুল ইসলাম শাওনসহ ৫২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে সদর থানায় এ মামলা করেন শ্রমিক লীগ কর্মী আব্দুল মালেক।
মামলায় নিহত শাওনকে তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে।এ ছাড়া সদর থানার এসআই মাঈনউদ্দিন বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুজ্জামান রতনসহ ৩১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার রাতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়।
মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুজ্জামান রতন শুক্রবার বিকেলে দেশ রূপান্তরের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘কয়েক মাস আগে মারা গেছেন মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাচ্চু। মুক্তিযোদ্ধা এ নেতাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এরপরও মৃত এ নেতাকে আসামি করেছে পুলিশ। এ ছাড়া আসামিদের মধ্যে টঙ্গীবাড়ি থানা বিএনপির নেতা মনির উদ্দিন পল্টুন জাপানে এবং জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মুন্না চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে রয়েছেন’।
তিনি জানান, পুরো মুন্সিগঞ্জের প্রতিটি ইউনিটের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আসামি করেছে পুলিশ।তিনি বলেন, ‘মামলা দায়েরের আগে থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীদের যাদের পেয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। বাসা-বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়েছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।’
গত বুধবার মুন্সিগঞ্জে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত শহীদুল ইসলাম শাওন বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ দিনর রাতে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় শ্রমিক লীগ কর্মী আব্দুল মালেক এবং সদর থানার এসআই মাঈন উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। শ্রমিক লীগ কর্মীর দায়ের করা মামলায় নিহত যুবদল কর্মী শাওনকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
সদর থানায় এসআই মাঈন উদ্দিন বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা, অস্ত্র লুটের চেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুজ্জামান রতনকে প্রধান করে দলের ৩১৩ নেতাকর্মীরা নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ১২০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ ছাড়া মুক্তারপুর এলাকার বাসিন্দা শ্রমিক লীগ কর্মী আব্দুল মালেক বাদী হয়ে মুক্তারপুর এলাকার দোকানপাট ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অপর আরেকটি মামলা দায়ের করেন।এ মামলায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুল হাইয়ের ছোট ভাই ও সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরো ২০০ জনকে।
এ প্রসঙ্গে দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই আবুল বাশার বলেন, ‘শাওন মামলার আসামি এটা সত্য। তবে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’বৃহস্পতিবার রাতে শাওনের প্রথম জানাজা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে তার লাশ মুন্সিগঞ্জের পথে রয়েছে।