ট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে শহিদুল ইসলাম আকাশ নামের এক যুবলীগকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চিনকিরহাট বাজারের নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই হামলার ঘটনা ঘটে। রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ হুমায়ুন রশিদ প্রকাশ মামুন তাঁকে হত্যা করেন বলে পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে। আকাশ হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার শহিদুল ইসলাম আকাশের বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ত্রাসী মামুন, ইকবাল ও মোতালেবসহ পাঁচজনের নাম বলেছে। তাঁদের সবার নাম থানার ওসিকে বলেছি। এর আগে মামুন ও আমার ছেলে আকাশ গ্রেপ্তার হয়ে জেলের একই ওয়ার্ডে ছিল। তখন তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে মামুনের ভয়ে আকাশকে অন্য ওয়ার্ডে নেই।’
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মামুন আমার ছেলেকে হুমকি দিয়ে বলেছিল, ‘জেল থেকে বের হয়ে তোকে খুন করব’। মামুন জেল থেকে বের হওয়ার ঠিকই চার দিনের মাথায় আমার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমার ছেলেকে মেরেছে মামুন। হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোনা মিয়ার শেল্টারে সে চলে।’
হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনা মিয়া জানান, ‘আমার এলাকায় কোনো সন্ত্রাসী নেই। তবে আমার প্রতিপক্ষ আছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় বারইয়ারহাট-করেরহাট সড়কে চিনকিরহাট বাজারে শহিদুল ইসলাম আকাশ নিজের মালিকানাধীন নাজমা টিম্বার অ্যান্ড ফার্নিচার মার্টে বসে ব্যবসায়িক কাজ করছিলেন। এ সময় স্থানীয় ইসলামপুর গ্রামের যুবক হুমায়ুন কবির মামুনের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ১০-১৫ জন হামলা চালান আকাশের ওপর।
এদিকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। হামলার সঙ্গে জড়িত কাউকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি জোরারগঞ্জ থানা-পুলিশ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে এ দিন আছরের নামাজের পর আকাশের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ভূঁইয়া বলেন, নিহত আকাশ যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর ঘটনা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে।
এদিকে জোরারগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত মো. হুমায়ুন রশিদ প্রকাশ মামুন (২৮) বিরুদ্ধে জোরারগঞ্জ থানা, ফেনীর ফুলগাজী থানা ও চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় অস্ত্র আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনসহ একাধিক অভিযোগে ১০টি মামলা রয়েছে। ইতিমধ্যে একটি মামলায় ২২ মাস জেলে খেটে চার দিন আগে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর হোসেন মামুন বলেন, যুবলীগকর্মী শহিদুল ইসলাম আকাশকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।