গায়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরে তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ায় গেলেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি ও পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তারিকুল ইসলাম।
বুলেট প্রুফ জ্যাকেট-হেলমেট পরে তুমব্রু সীমান্তে গেলেন ডিসি-এসপি
সুজাউদ্দিন রুবেল
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখায় যায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি দল।
সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরের ক্যাম্প, চৌকিসহ সৈন্যদের অবস্থান স্বচক্ষে দেখেন তারা। এ ছাড়া শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ও শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন এবং রোহিঙ্গাদের সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখা ছেড়ে আসে দলটি।
পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঘুমধুমের পরীক্ষার্থীরা কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। তাদের সাহস জোগাতে এসেছি, আশ্বস্ত করেছি নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন সব সময় পাশে আছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। প্রশাসন সীমান্তে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
আর বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া আতঙ্ক প্রশমনে কাজ করছে পুলিশ। পাশাপাশি জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।
তিনি বলেন, সকাল থেকে ঘুমধুম সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। প্রথমে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের হল পরিদর্শন করি। এর পরপর ঘুমধুমের ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হয়। এসব স্থান পরিদর্শন করার সময় নিরাপদ মনে করেছি। তবে তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখায় যাওয়ার সময় অনিরাপদ মনে হওয়ায় গায়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিধান করি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকও বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিধান করেন। শুধু নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এটি পরা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, কোনারপাড়া শূন্যরেখায় যাওয়ার পর সীমান্তে মিয়ানমারের ক্যাম্প, চৌকি ও সৈন্যদের অবস্থান দেখতে পেয়েছি। বিশেষ করে পাহাড়ের টিলার ক্যাম্পে সৈন্যদের অবস্থান। এ ছাড়াও শূন্যরেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে কথা বলি এবং রোহিঙ্গাদের সেবাদানকারী সংস্থা কার্যক্রমগুলো দেখি। তারপর সবাই কোনারপাড়া সীমান্ত ছেড়ে চলে আসি।
এদিকে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্তে অতি ঝুঁকিতে থাকা ৩০০ পরিবারের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জরুরি মুহূর্তে প্রয়োজন পড়লে তাদের সরিয়ে আনা হবে।
ঘুমধুম সীমান্তে বসবাস করছে ২৪ হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দা। সীমান্তে গোলাগুলিতে এদের সবারই এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটছে।