রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল শেষ হয়েছে গত ১৫ সেপ্টেম্বর। এরই মধ্যে জমে উঠেছে এই স্থানীয় সরকার নির্বাচন।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে পাওয়া যাচ্ছে ব্যতিক্রমী সব খবর। এমন একটি ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায়। সেখানে সংরক্ষিত সদস্য মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্থানীয় চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী প্রার্থী হয়েছেন। অনেক নিষেধের পরও সতিনের প্রতিপক্ষ হওয়ায় এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে শেষ পর্যন্ত প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
তার নাম রেজাউল হক। তিনি রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এনামুল হকের ছোট ভাই। স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার বিষয়ে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তিনি নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে পোস্ট দেন। এরপর তার সেই পোস্ট আলোচনায় উঠে আসে। এছাড়াও রেজাউল হক নিজ কার্যালয়ে ইউপির সাধারণ সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার বিষয়টি জানান।
এর আগে, রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৫ সেপ্টেম্বর ওই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন তারা দুইজন। তারা হলেন- ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হকের দুই স্ত্রী নাছিমা বিবি ও ফিরোজা বেগম। এরপর দু’জনই সক্রিয়ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দেন। এর মধ্যে রেজাউল হক তার প্রথম স্ত্রী নাছিমাকে নির্বাচন থেকে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলেন। তবে নাছিমা তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রেজাউল তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। প্রথম স্ত্রী নাছিমা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের শিকদারী গ্রামে রেজাউল হকের নিজ বাড়িতে থাকেন। আর দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা একই উপজেলা পরিষদের ভবানীগঞ্জের ভাড়া বাসায় থাকেন। জেলার পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে তারা কেউই রাজনীতি করতেন না।
রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন জানান, আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আর বাগমারা, মোহনপুর ও দুর্গাপুর থেকেই সংরক্ষিত সদস্য পদে সাত প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী নাছিমা বিবি ও ফিরোজা বেগমও প্রার্থী হয়েছেন। অন্য পাঁচ প্রার্থী হলেন- পারুল বিবি, সুলতানা পারভীন, রাবেয়া খাতুন, লাল বানু ও নারগিস বিবি।
আজ (শনিবার) রাতে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক বলেন, ঘটনা সত্য। তা না করে কী করবো বলেন? প্রত্যাখ্যান করেছি। তিনি আমার কথার অবাধ্য হয়েছেন। এর আগেও অবাধ্য হয়েছিলেন তিনি। আরেকবারও তাকে ডিভোর্স দিয়েছিলাম, যায় না। আর বড়টা (নির্বাচনে) যোগ্যতাসম্পন্নও না। তাকে দিলে হতোও না। আমরা বলতেও পারতাম না।
এদিকে নাছিমা বিবি জানান, তিনি তালাকের বিষয়টি শুনেছেন। তবে এখনো কোনো কাগজ পাননি। তিনি এখনও স্বামীর বাড়িতেই আছেন