প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির প্রতিবাদে সমাবেশ করেছেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। শনিবার বিকেলে পৌর সদরের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আবদুল মালেক উকিল মহাসড়কে এ প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এ কর্মসূচি ঘিরে সোনাপুর-ঢাকা-চট্টগ্রাম ও অভ্যন্তরীণ সড়কে দিনভর যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেন একরামুল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের একাংশ। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে এককভাবে সমাবেশ ডাকায় জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি অংশগ্রহণ করেনি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, প্রতিবাদ সভার নামে সড়ক অবরোধ করে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলেছেন। সভায় কোনো প্রতিবাদের শব্দ উচ্চারণ করেননি একরামুল করিম চৌধুরী। বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো শব্দ উচ্চারণ করা হয়নি। এতেই প্রমাণিত হয়, একরামুল করিম বিএনপির সঙ্গে আঁতাতের রাজনীতি করেন।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সামছুদ্দিন জেহানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন একরামুল করিম চৌধুরী, বাহার উদ্দিন খেলন, যুবলীগ নেতা ইমন ভট্ট, শাহাদাত উল্যা সেলিম, ফজলুল হক সুজন, নুর আলম সাজু, আবদুর রহিম, জেলা ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আরমান, সিদ্দিকুর রহমান সাবু প্রমুখ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ কর্মসূচির কারণে শনিবার সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কুমিল্লা-রামগঞ্জ সড়কে চলাচলকারী যাত্রবাহী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। সোনাপুর থেকে অনেকে হেঁটে মাইজদী বাজার যান। সেখান থেকে রিকশা ও অটোরিকশায় গন্তব্যে গেছেন।
যাত্রী আবদুল বারেক ও রফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁরা ঢাকায় যাওয়ার জন্য রামগতি থেকে সোনাপুর আসেন। এসে জানতে পারেন কোনো বাস ছেড়ে যাবে না। পরে ছয় কিলোমিটার হেঁটে সুধারাম থানার সামনে অটোরিকশায় চৌরাস্তার দিকে যান।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাঁরা ছাত্রাবাস থেকে শহরে এসে টিউশনি করান। সড়কে সমাবেশের কারণে বাস চলাচল না করায় তাঁরা টিউশনিতে যেতে পারেননি। ভ্রাম্যমাণ কাপড় ব্যবসায়ী হাবিবর রহমান বলেন, তিনি বেলা ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাসের জন্য অপেক্ষা করেও বাস পাননি।
নোয়াখালী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, প্রায় সব বাস সমাবেশে যোগ দিতে আসা লোকজনকে বহনের জন্য গিয়েছিল। এ কারণে সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। কয়েকটি বাস কবিরহাট ও বসুরহাট হয়ে চলাচল করেছে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, বাস চলাচল বন্ধ থাকার বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।