বঙ্গবন্ধুকে নিজের অনুভূতি জানিয়ে চিঠি লেখার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১০ শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের আরসি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে সিনিয়র ও জুনিয়র দুইটি ক্যাটাগরিতে পাঁচজন করে শিক্ষার্থীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।সিনিয়র ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- সুশীল মালাকার, শৈহাইনু মার্মা, রাতুল চৌধুরী, অমিয় ভৌমিক পলক ও কানিজ ফাতিমা কণিকা।
জুনিয়র ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন- আয়েশা ছিদ্দিকা তাসমি, সুর্য কুমার শীল, রনিত অধিকারী, সামিহা খান ও ফাতিন হাসনাত।
বঙ্গবন্ধুকে বর্তমান প্রজন্মের না বলা কথাগুলো ব্যক্ত করার অভিপ্রায়ে ‘প্রিয় বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ষষ্ঠবারের মত এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে সংগঠনটি।
গত ১৭ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন বয়সের প্রতিযোগীদের কাছ থেকে চিঠি সংগ্রহ করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী, নাট্যব্যক্তিত্ব ড. ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়।
অনুষ্ঠানে পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বঙ্গবন্ধুকে স্থাপনা ও সংগঠনের নামের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে পরের প্রজন্মের কাছে তার আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও আদর্শ আমরা পরের প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে না পারলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন (মঞ্জু) বলেন, “বাংলার ইতিহাসের সংগ্রামে সংস্কৃতি ও রাজনীতি একসাথে হাতে হাত ধরে হেঁটেছে, ঐতিহাসিক অনেক সংগ্রামে সফলতার ভিত্তি ছিল সংস্কৃতি ও রাজনীতির একসাথে অবস্থান।”
শিক্ষক, গবেষক ও নাট্যকার ড. রতন সিদ্দিকী সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক আক্রমণের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন যে, এদেশে একটি অসাম্প্রদায়িক জাতিগোষ্ঠী গড়ে উঠবে।
“… আসুন আমরা রবীন্দ্র-নজরুলের বাংলায় হিন্দু-মুসলমান রাখিবন্ধনের মাধ্যমে আবার সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলি।”
মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “বিজ্ঞানের কথা বলতে গিয়ে আমাকে ১৯ দিন জেলে থাকতে হল, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে তিনি আমার মনের ব্যথা বুঝতেন।
“নতুন প্রজন্মের কাছে আমার আশা তারা যেন বঙ্গবন্ধুকে আঁকড়ে ধরে, তা হলেই আমরা শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে গড়ে উঠব।”
অনুষ্ঠানের সভাপ্রধান ও সাংস্কৃতিক সংসদের মডারেটর সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী বলেন, “এই ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নান্দনিকভাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি সাদিয়া আশরাফী থিজবী বলেন, বঙ্গবন্ধু যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে গেছেন,তার ওপর যখনই আঘাত এসেছে তখনই প্রতিবাদ হয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জয় দাস বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যেখানে সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা হয় সেখানে ধর্মান্ধতা বাসা বাঁধতে পারে না। তাই আমাদের এই সাংস্কৃতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বাংলাদেশের স্বার্থে।”
অনুষ্ঠানের অন্যদের মধ্যে “আমরা ক’জন মুজিব সেনা”র সভাপতি সাঈদ আহমেদ বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু তোহা উপস্থিত ছিলেন।