“পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ভারতে গিয়ে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য ‘যা যা করা দরকার’, তা-ই করার অনুরোধ করেছেন। এটি তিনি নিজেই গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শহরে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে সবাইকে জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনকে তবু ধন্যবাদ। সরকার যে ক্ষমতায় থাকার জন্য ভারতের ওপর নির্ভরশীল, তা তিনি অকপটে বলেছেন।
“এর নজির বা আলামতও পাওয়া গেছে অতীতে। ২০১৪ সালে অধিকাংশ দলের মতো এরশাদের জাতীয় পার্টিও যখন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল এবং একতরফা নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা ঘনীভূত হচ্ছিল, তখন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশ সফর করছিলেন। এরশাদ সে সময় জানিয়েছিলেন যে ভারত তাঁকে জোর করে নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি করিয়েছে। সারা বিশ্বের পর্যবেক্ষকদের বর্জনের মধ্যে ভুটান ছাড়া একমাত্র ভারতই সেই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছিল।
“২০১৪ তো বটেই, আরও বিতর্কিত ২০১৮ সালের নির্বাচনকে ভারত সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হিসেবে সোৎসাহে সার্টিফাই করেছিল। এগুলো ভারত করেছে প্রকাশ্যে। এমন রাখঢাকহীন সমর্থন করলে আড়ালেও অনেক কিছু করার কথা। বৃহৎ প্রতিবেশী হিসেবে সেটি করার সামর্থ্য ও সুযোগ ভারতের আছে।
“কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো কি একটি স্বাধীন দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য? পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে সত্য উদোম করে দিয়েছেন, তা কি অসীম আত্মদানে দেশ স্বাধীন করা জাতির জন্য গৌরবজনক? ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রকৃতিই বা কি এই সরকারে আমলে?”
— আসিফ নজরুল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক