জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাপ) সংস্থা লঞ্চের ভাড়া বাড়ালেও যাত্রী সংকটের কারণে আগের ভাড়াতেই চলছে লঞ্চ। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তবে ঈদ বা অন্য কোনো ছুটিতে যাত্রীর চাপ বাড়লে লঞ্চ মালিকরা যাতে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে না পরেন সেজন্য ভাড়া পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, গত মঙ্গলবার যাপ সারাদেশের নৌপথের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে তালিকা প্রকাশ করে। এতে ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটের ২৫২ কিলোমিটার দূরত্বে ডেকের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ৬৯৫ টাকা। আর সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া হয় ২৭৮০ টাকা এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া ৫৫৬০ টাকা।
মঙ্গলবার থেকেই এই ভাড়া কার্যকর করার কথা থাকলেও যাত্রী সংকটে সেই পরিকল্পনা থেকে আপাতত পিছু হটেছেন লঞ্চ মালিকরা। বুধবার (১৭ আগস্ট) পটুয়াখালী নদীবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যে দুটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে তাতে যাত্রীদের তেমন ভিড় লক্ষ করা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের ডেকে ডেকে লঞ্চে তোলা হচ্ছিল। আর লঞ্চের ডেকপ্রতি ভাড়া নেওয়া হয় ৫০০ টাকা করে।
পটুয়াখালী শহরের শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, লঞ্চ যাত্রীদের কাছে একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। তবে সেটি সাধ আর সাধ্যের মধ্যে রাখতে হবে। বর্তমানে সরকার যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে তা দিয়ে কোনোদিন কেউ লঞ্চে যাবে না। তবে যতটুকু জানতে পারলাম, লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ ভাড়া বাড়াচ্ছে না, তারা আগের ভাড়াতেই যাত্রী পরিবহন করবে।
এদিকে, লঞ্চমালিক কর্তৃপক্ষ বলছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই তাদের যাত্রীদের চাপ কমতে থাকে। বর্তমানে প্রতিটি লঞ্চের ২৫ শতাংশ কেবিন এবং ২০ শতাংশ ডেক খালি থাকছে। এরপরও টিকে থাকতে তারা সরকারনির্ধারতি পুরোনো ভাড়ার থেকেও কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছেন। আগে সরকারনির্ধারিত ভাড়া ছিল ডেকে ৪২০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিনে ১৬৮০ টাকা এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া ছিল ৩৩৬০ টাকা। তবে বুধবার সিঙ্গেল কেবিন ১৩০০ টাকা এবং ডাবল কেবিনে ২৫০০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হয়েছে।
এমভি পূবালী-১২ লঞ্চের সুপারভাইজার ইকবাল মাহমুদ বলেন, ভাড়া বাড়ানো হলেও আমরা যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে ভাড়া কম নিচ্ছি। এর পরও আমাদের প্রতি ট্রিপে লোকসান হচ্ছে। যাত্রীদের চাপ নেই বললেই চলে। যাত্রী না বাড়লে হয়তো টিকে থাকাটা মুশকিল হয়ে যাবে। তবে আপাতত এই ভাড়ায় আমরা চলাচল করছি।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের টিএ শাখা থেকে গত ১৬ আগস্ট বর্ধিত ভাড়ার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে প্রতি ১০০ কিলোমিটারের জন্য সর্বোচ্চ যাত্রীভাড়া প্রতি কিলোমিটারে তিন টাকা এবং ১০০ কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকা ৬০ পয়সা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া জনপ্রতি ভাড়া সর্বনিম্ন ৩৩ টাকা করা হয়।