আরিফ মাহবুব: প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় নীলা রায় নামে এক শিক্ষার্থীকে বাসায় ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে হ’ত্যা করা হয়, সাভারে স্কুলছাত্রী নিলা রায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। ধ’র্ষণ, শিশু ধ’র্ষণ, ধ’র্ষণের পর হ’ত্যা, ধ’র্ষণ জনিত আত্মহ’ত্যা এখন আমাদের সামাজিক ব্যাধির মতো আকড়ে ধরেছে।
ধর্ম যখন রাজনীতির হাতিয়ার ধ’র্ষণ তখন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। সিসি ক্যামেরা দিয়ে মানবতা ও নৈতিকতাকে রক্ষা করা গেলে ধর্মের কল অনেক আগেই নড়ে চড়ে উঠতো, রাস্তার ডাস্টবিনে ধর্ষিতাদের লাশ পড়ে থাকতো না।
৫৬০টি মসজিদ কমপ্লেক্স তৈরির ঘোষণা আসার সাথে সাথে রহমতের বন্যায় দেশ তো ভেসে যাবার কথা, দুর্নীতি ধ’র্ষণ, লুটপাট তো নিমিষেই ঢুবে যাবার কথা, আসলে তা ঘটেনি কারণ সমাজের অনাচার অনিয়মকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাই সামাজিক উন্নয়ন।
সরকারের মিত্র হেফাজতের নেতা ঘোষণা দিয়ে ২০ হাজার মানুষের প্রতিশ্রুতিও আদায় করে নিলেন যেন মেয়েদের ৫ ক্লাসের বেশি শিক্ষা দেওয়া না হয়, এভাবেই ধর্ম একদিন একটি দেশ একটি সমাজ একটি জাতি ও রাজনীতি সব কিছুকেই গ্রাস করবে। ধর্মই নারী পুরষদের মাঝে দূরত্বের সৃষ্টি করে রেখেছে, ধর্মের দৃষ্টিতে নারী দেখলেই লালা ঝরে, নারীকে পর্দার আড়ালে ঢেকে রাখতে হয়।
সব ধর্মেই নারী ও পুরুষদের মাঝে এক বিস্তর ব্যবধানের সৃষ্টি করে রেখেছে, নারী পুরুষদের জন্য সমান অধিকারের একটি আধুনিক সমাজ বলতে যেটা বোঝায়।
সেটা হচ্ছে একজন নারীর দৃষ্টিতে একজন পুরুষ মানে শুধুই একজন মানুষ আর পুরুষের দৃষ্টিতেও তাই। ধর্মের কাছে পশ্চিমা দেশের সংস্কৃতির হয়তো হাজারও খারাপ দিক আছে কিন্তু ভালো দিক হচ্ছে মানুষ মানুষের গায়ে হাত তোলে না, বিষয়টি শিশু বয়স থেকেই নাগরিকদের শিক্ষা দেওয়া হয়। শিশুদের মানসিক ও শারীরিক অত্যচার মানেই গুরুতর দণ্ডনীয় অ’পরাধ ও লিঙ্গ ভেদে মানুষকে অসম্মান করার বিষয়টি অনেক আগেই এসব দেশ থেকে উঠে গেছে, যৌন হয়রানি করাটা গুরুতর শাস্তি যোগ্য অ’পরাধ। ব্যক্তিগত উদ্যেগে শিক্ষামূলক কনসেপ্টে শিশু কিশোরদের জন্য একটি ভ্রাম্যমান যৌন শিক্ষা কার্যক্রম হাতে নেবার সময় এসে গেছে, সরকারের কোনো বেকার আছে বলে মনে হচ্ছে না। যদি থাকতো তবে ধর্ম গুরুরা ধর্মের ডুগডুগি বাজিয়ে নারীদের অশ্লীল ভাবেই অপমাণ করে যেতো না।
দিনের পর দিন আর এখানেও সরকারের নীরবতাও অপর একটি কারণ। কারণ ধর্মান্ধরা সরকারের টুটি চেপে ধরে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে আনতে পারে, গোটা সমাজ আজ ধর্ষকদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে, ধ’র্ষণ এখন ছেলে খেলার মতো যেন রাতের আধারে মহল্লার কোণায় কাবাডি খেলার আসর বসেছে।
খুব অল্প বয়স থেকেই শিশু কিশোরদের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্যে সভ্যতা ও মানবতার কান্ডারি যে, সব দেশগুলোতে শিশু কিশোরদের জন্য যৌন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে, আজ আমাদের দেশেও সেই আদলে ধ’র্ষণ নামক ব্যাধি থেকে দেশকে রক্ষার তাগিদে অনুরূপ কার্যক্রমের তাগিদ অনুভব করছি। ফেসবুক থেকে