জেকেজি হেলথ কেয়ারের জালিয়াতির অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগী মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
কিন্তু এখনও তার নাগাল ‘পাওয়া যায়নি’ বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জেকেজিসহ কয়েকটি জালিয়াতির ঘটনায় সমালোচনার মুখে দুদিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদ ছাড়েন ডা. আজাদ, বৃহস্পতিবার তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে।
ডা. আজাদ পদত্যাগপত্র দেওয়ার পরদিন বুধবার গোয়েন্দা পুলিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গেলেও তার দেখা পায়নি। অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানার সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি কিছু নথিপত্র নিয়ে আসে তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির পদ ছাড়তে হল আবুল কালাম আজাদকে
জেকেজির তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তাদের কাছে গোয়েন্দারা
ডিবির এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, জেকেজিকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি শুধু মহাপরিচালকই জানতেন। ফলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক কিছু স্পষ্ট হবে।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় ডিবির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার গোলাম মোস্তফা রাসেল বিডিনিউজ টোয়েনিটটফোর ডটকমকে বলেন, “জেকেজির বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তার ফোন কখনও ব্যস্ত, কখনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।”
এরপর বৃহস্পতিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার ফোন করার পর ডা. আজাদ তা ধরেন।
তার কাছে জেকেজির বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে এখন কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।
তবে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ সংক্রান্ত সব কাগজ অধিদপ্তরেই আছে।”
কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষায় জেকেজির অনুমোদন বাতিল
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত এপ্রিলে কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পায় জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা বা জেকেজি হেলথ কেয়ার।
কিন্তু সংস্থাটি ভুয়া কোভিড-১৯ সনদ দিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে গত জুন মাসে অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযানে নামে পুলিশ, ভুক্তভোগীদের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল চৌধুরীসহ কয়েকজনকে।
এরপর ২৪ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জেকেজিকে দেওয়া অনুমতিপত্র বাতিল করে।
আরিফুলের স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ ছিলেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার। তিনি জেকেজির চেয়ারম্যান পরিচয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব খাটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
গ্রেপ্তারের ঠিক আগে যা বললেন ডা. সাবরিনা
এরপর গত ১২ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয় ডা. সাবরিনাকে। গ্রেপ্তারের আগে তিনি দাবি করেন, জেকেজিতে অনিয়ম দেখে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সংস্রব ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আজাদকে তা জানিয়েছিলেন।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বুধবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জেকেজির মামলার তদন্ত ‘অনেকদূর’ এগিয়েছে। ‘শিগগিরই’ তারা অভিযোগপত্র দেবেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা রাসেল বলেন, করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে চিঠির মাধ্যমে জেকেজিকে অনুমতি দিয়েছিল, শুধু সেটি তারা পেয়েছেন।
আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করা হবে বলে জানান তিনি।
পদত্যাগী স্বাস্থ্যের মহাপরিচালকের বিচার চান ফখরুল