ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সহায়তা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইউপি সদস্য রইছ উদ্দিন। দিনের পর দিন সহায়তা বা টাকা কোনটাই না পেয়ে বিচার দাবি করেছেন দিশেহারা ভুক্তভোগী হতদরিদ্ররা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ঈশ্বরগঞ্জের রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রইছ উদ্দিনের প্রতারণার শিকার মমরেজপুর গ্রামের নিঃসন্তান বিধবা বৃদ্ধা হামিদা খাতুন ও বিলখেরুয়া গ্রামের বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে জানাচ্ছিলেন তাদের অভিযোগের কথা।
এদের মতো শতশত অসহায়-দরিদ্র মানুষকে বয়স্কভাতা, বিধবাভাতাসহ সরকারী সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেয়ার প্রলোভনে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইউপি সদস্য রইছ উদ্দিন।
একেক জনের কাছ থেকে নিয়েছে ২ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কোনো সুযোগ-সুবিধা তো দেয়ইনি উল্টো টাকা ফেরত চাইলে হুমকি-ধামকি ও মারধর করা হয় তাদের। রইছ উদ্দিনের ফাঁদে পড়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে।
ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, ‘মেম্বারে আমার থেকে ২২ হাজার টাকা নিছে। ঘর বাইন্ধে দিবে, প্রতিবন্ধী কার্ড বানাইয়া দিব বলে।’
এক বৃদ্ধা বলেন, ‘রইছ উদ্দিনের হাতে ধরছি পাই ধরছি, সে আমারে টাকাটা দিল না।’
আরেকজন বলেন, ‘আমি যদি টাকা চেয়ে বিচার চাই তাইলে নাকি আমার নামে কেস হয়ে যাবে, হুমকি দেহায়।’
এদিকে দরিদ্র মানুষের টাকা আত্মসাৎকারী ইউপি সদস্য রইছ উদ্দিনের বিচার ও টাকা ফেরতের ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘৭০ লাখের মত টাকা সে মানুষের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে।’
আরেকজন বলেন, ‘শত শত মানুষের কাছ থেকে টাকা নিছে। এর আমরা বিচার চাই।’
ঈশ্বরগঞ্জ ৮নং রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোদাব্বিরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএনও মহোদয়কে বলেছি আইনগত ব্যবস্থা যা যা নেওয়ার দরকার নিতে।’
ময়মনসিংহ ঈশ্বরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে তদন্ত কর্মকর্তা এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রইছ উদ্দিন তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছে।