মারা যাওয়ার ৪২ দিন পর সন্তানের লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানায় পরিবার। পরে ত্রিশাল থানা পুলিশের সহযোগিতায় দাফন করা হলো আরাফাত নামের কিশোরের। বৃহস্পতিবার দুপুরে ত্রিশাল থানা পুলিশ লাশ দাফনের খরচ বাবদ তার পিতাকে পাঁচ হাজার টাকা পুলিশের সহযোগিতার আশ্বাস দিলে তার পিতা ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম গ্রামে দাফন করার জন্য সম্মতি প্রদান করে। পরে ত্রিশাল ও ফুলবাড়িয়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় আরাফাতের লাশ দাফন করা হয়।
জানা যায়, আরাফাত ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার চরপাড়া এলাকার চড়ুইতলা গ্রামের মজনু মিয়ার সন্তান। গত ১৮ এপ্রিল তার নানা বাড়ি ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম গ্রামে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তার পরিবারের সদস্যরা ফুলবাড়িয়া থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যায়। ঘটনার দুইদিন পর আরাফাতের শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২০ এপ্রিল ময়মনসিংহ এসকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ভর্তির দুই দিন পর ২২ এপ্রিল আরাফাত হাসপাতালে মারা যায়। মৃত্যুর পর তার শরীর থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হলে করোনা ফলাফল নেগেটিভ আসে।
এরপরও মৃত আরাফাতের মরদেহ তার পরিবার গ্রহণ না করায় মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। মৃত্যুর ৪২ দিন পর বুধবার আরাফাতের বাবা কোতোয়ালী থানায় লিখিতভাবে লাশ গ্রহণের অনিচ্ছার কথা জানান। পরিবার এবং এলাকাবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়। এ সময় তিনি শরীয়াহ্ মোতাবেক তার ছেলের দাফনের জন্য কোতয়ালী থানা পুলিশকে অনুরোধ জানান।
এ ঘটনা ত্রিশাল থানা পুলিশের কাছে সংবাদ আসলে বৃহস্পতিবার দুপুরে ত্রিশাল ও ফুলবাড়িয়া সার্কেলের এএসপি স্বাগতা ভট্রাচার্যের নির্দেশে আরাফাতের পিতাকে ত্রিশাল থানা ডেকে এনে লাশ দাফন খরচ বাবদ পাঁচ হাজার টাকা ও পুলিশের সহযোগিতার কথা বললে পিতা মজনু মিয়া লাশ দাফনে সম্মতি জানায়। ফুলবাড়িয়া ও ত্রিশাল থানা পুলিশের সহযোগিতায় আছিম গ্রামে আরাফাতের লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছে।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান জানান, আরাফাত নামের এক তরুণ গত ১৮ই এপ্রিল বিষপান করলে তাকে ফুলবাড়িয়া থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এর দুদিন পর মারা ময়মনসিংহে মারা যাওয়ার পর ৪২দিন পর তার বাবা লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ত্রিশাল ও ফুলবাড়িয়া সার্কেলের নির্দেশে আমরা লাশ দাফনের ব্যবস্থা করছি।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, মজনু মিয়া ত্রিশালের ঠিকানা ব্যবহার করলেও তার ছেলে থাকত ফুলবাড়িয়ার আছিম গ্রামে। সেখানেই আরাফাত বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আমরা বৃহস্পতিবার দুপুরে তার বাবাকে খবর দিয়ে থানায় নিয়ে আসার পর পাঁচ হাজার টাকা ও পুলিশের সহযোগিতার আশ্বাস দিলে তিনি পুলিশের সহযোগিতায় দাফনে সম্মতি প্রদান করে।