ভারতে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য মার্চে দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগি জামাতের ধর্মীয় সমাবেশের দিকে আঙুল উঠেছিল আগেই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই সমাবেশে দেশ-বিদেশ থেকে আসা লোকজনের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
দেশটির নানা রাজ্য থেকে যাওয়া প্রতিনিধিরা সভা শেষে নিজ নিজ স্থানে ফিরে গিয়েছে সংক্রমণ নিয়ে। তখনই অভিযোগ ওঠে, পর্যটক ভিসা নিয়ে ভারতে এসে ধর্মীয় সভায় যোগ দিয়েছে বিদেশ থেকে আসা লোকজন। তারা ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এধরনের বিদেশিদের কালো তালিকাভুক্তও করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, তাবলিগি জামাতের কার্যকলাপে জড়িত থাকায় ইতিমধ্যে ব্ল্যাকলিস্টে নাম ওঠা ৯৬০ জন বিদেশি নাগরিকের সামনে ভারতের দরজা বন্ধ হচ্ছে। তারা ১০ বছর ভারতে ঢুকতে পারবে না। তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।
মৌলানা সাদের নেতৃত্বে তাবলিগি জামাতের জমায়েতে যোগ দেওয়ার জেরেই এই ব্যবস্থা নিল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।
মৌলানা সাদ, তাঁর ছেলে সহ অনেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নজরে রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে লকডাউন ভাঙার অভিযোগ রয়েছে। দিল্লিতে তাবলিগি জামাতে হেডকোয়ার্টার নিজামুদ্দিন মার্কাজে এক বিশেষ সভায় তারা যোগ দিয়েছিল।
মৌলানা সাদ, তাঁর ছেলে সহ অনেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নজরে রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে লকডাউন ভাঙার অভিযোগ রয়েছে। দিল্লিতে তাবলিগি জামাতে হেডকোয়ার্টার নিজামুদ্দিন মার্কাজে এক বিশেষ সভায় তারা যোগ দিয়েছিল।
ওই সভা থেকে একের পর এক করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলে। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে চলে আসে তারা। ব্ল্যাকলিস্টে থাকা সদস্যদের মধ্যে রয়েছে চারজন মার্কিন নাগরিক, ৯ জন ব্রিটিশ ও ৬ চিনা নাগরিক।
শতাধিক তাবলিগি জামাত সদস্যের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। বিদেশ থেকে আসা সদস্যরা প্রত্যেকেই ট্যরিস্ট ভিসায় এসেছিল বলে জানা গিয়েছে।
নিজামুদ্দিন মার্কাজে তাবলিগি জামাতের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য চার্জশিট ফাইল করা হয় কিছুদিন আগেই ৮৩ জন বিদেশির বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়। মোট ২০টি চার্জশিট পেশ করা হবে বলেই জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমন একধাক্কায় এতটা বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে এদের হাত রয়েছে।
মে মাসের শুরুর দিকে, দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ তাবলিগি জামাতের সঙ্গে যুক্ত ৭০০ বিদেশির কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে, সেখানে ছিল পাসপোর্টও। সব তথ্যের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, এই সকল তাবলিগি জামাত সদস্যরা মার্চ মাসে নিজামুদ্দিন মার্কাজের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
মে মাসের ৫ তারিখ, দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ তাবলিগি জামাতের প্রধান মওলানা সাদের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং ২০ জনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে যারা দিল্লির নিজামুদ্দিন মার্কাজে তাবলিগি জামাতের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন অথবা এর ম্যানেজমেণ্টের অংশ ছিলেন।
মওলানা সাদের বিরুদ্ধে ১৮৯৭ সালের মহামারি আইনে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে এই অনুষ্ঠানের পরই দেশে সংক্রমণ একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। পরে যা কোভিড-১৯ হটস্পট হয়ে ওঠে।