লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় মিজদাহ শহরে ২৬ বাংলাদেশির ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কঠোর নিন্দা জানিয়েছে লিবিয়ার সরকার। সোমবার (১ জুন) লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় এ নিন্দা জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, এ হত্যাকাণ্ডকে কাপুরুষোচিত কাজ উল্লেখ করে হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনারও অঙ্গীকার করা হয়েছে এ শোকবার্তায়। এতে নিহতদের পরিবার ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচারের বিষয়ে লিবিয়ার সরকার গৃহীত পদক্ষেপসমূহ নিহতদের পরিবার ও বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হবে বলে শোকবার্তায় উল্লেখ করা হয়।
এর আগে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে মিজদা শহরে গত বৃহস্পতিবার সকালে এক মানব পাচারকারীর সহযোগী ও আত্মীয়-স্বজনদের নির্বিচারে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অভিবাসন প্রত্যাশী ২৬ বাংলাদেশি। এ সময় গুলিতে আহত হয়েছেন আরও ১১ জন।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান একজন। তিনি জানান, নিহত ২৬ জনসহ মোট ৩৮ জন বাংলাদেশি ও কিছু সুদানি নাগরিক প্রায় ১৫ দিন ধরে ঐ অপহরণকারী চক্রের হাতে আটক ছিলেন। লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলী থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মিজদায় আটক করে রাখা হয়েছিল তাদের। সেখানেই ২৮ মে সকালে বন্দীদের ওপর গুলি চালায় অপহরণকারীরা।
অপহরণকারীরা মোট ৩৮ জনের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য জড়ো করে। অপহরণের পর মিজদাতেই প্রায় ১৫ দিন অপহরণকারীদের জিম্মায় ছিলেন অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশি ও সুদানি নাগরিকরা। অপহরণকারীদের সাথে আটক হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তিপণ নিয়ে দর কষাকষি চলছিল।
তবে তাদের কাঙ্ক্ষিত দাম দিতে পারছিলো না কেউই। মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আাটককৃতদের ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে অপহরণকারীরা। এক পর্যায় বাংলাদেশিদের সাথে থাকা সুদানি নাগরিকরা অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে মেরে ফেলেন। এরপর ক্ষুদ্ধ হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালালে ৩৮ জন বাংলাদেশির সবাই গুলিবিদ্ধ হয়। মারা যায় ২৬ জন।