ভারতে প্রেমিকাকে খুন করে পালিয়ে আসা আবুল কাশেমকে (৫১) গ্রেফতার করেছে পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিবি) সদস্যরা। হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৫ মাস পর ৩০ মে ভোর ৩টার দিকে যশোর ডিবির একটি চৌকষ দল ঢাকার পল্লবী থেকে তাকে গ্রেফতার করে। একইসঙ্গে জব্দ করা হয়েছে ভিকটিমের মোবাইল ফোন ও তার পাসপোর্ট।
রোববার (৩১ মে) বিকেলে যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, যশোর শহরের আরবপুর পাওয়ার হাউজপাড়া এলাকার শাহানুর ইসলামের স্ত্রী আসমা। থাকতেন যশোর সদরের নওদাগাঁ এলাকার জনৈক মঞ্জু নামে এক শিক্ষকের বাড়িতে। গত ১৫ জানুয়ারি আসমা ও তার খালা মনোয়ারা বেগম (৫৫) ভারতে চিকিৎসার জন্য যান। তারা ভারতের বনগাঁয়ে একটি হোটেল (শ্যামাপ্রসাদ লজ) এ অবস্থান করেন। সেখানে আসমার সঙ্গে দেখা হয় তার প্রেমিক আবুল কাশেমের। এরপর কাশেম তাকে শপিং করতেও নিয়ে যান। পরদিন সকালে হোটেলের তালাবদ্ধ কক্ষে আসমা ইসলামের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এর পর ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এ ঘটনায় বনগাঁ থানা একটি মামলা হয় (যার নম্বর-৩৩ /১৬.০১.২০২০)। আসমার স্বজনরা বনগাঁ থানা থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করে এবং ভাই আজিম উদ্দিন গত ৩০ জানুয়ারি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কাশেমের বিরুদ্ধে যশোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন দাখিল করেন। আদালতের নির্দেশে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা (নম্বর -০৯/০৫.০২.২০২০, ধারা-৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪) রুজু হয়। মামলাটি গত ১৪ মে পুলিশ সুপার জেলা গোয়েন্দা শাখায় তদন্তের জন্য ন্যস্ত করেন।
এরপর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান শনাক্ত করে ছদ্মবেশ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ। ইন্সপেক্টর সোমেন দাসের নেতৃত্বে এসআই মফিজুল ইসলামসহ একটি দল ৩০ মে রাত ৩টার দিকে ঢাকার মিরপুর পল্লবী বাউনিয়াবাদ বস্তি বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কাশেমকে গ্রেফতার করেন। এরপর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আসমা ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ঢাকার মানিকনগর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসমার সঙ্গে ড্রাইভার কাশেমের পরকীয়া প্রেম ও অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়। এসব কারণে ২০১৩ সালে আসমাকে তার স্বামী শাহানুর তালাক দেন। পুনরায় ভিকটিম আসমা তার স্বামী শাহানুরের সঙ্গে ঘর সংসার করার সিদ্ধান্ত নিলে কাশেম তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং এক পর্যায়ে ভারতে নিয়ে হোটেলে হত্যা করে। আটক আবুল কাশেম পুরাতন কসবা গাজীরঘাট রোড এলাকার বশির মিয়ার ছেলে।