জেলার গুরুদাসপুরে মিঠু (৩০) নামের এক যুবকের বাম পা কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার (৩০ মে) রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে খুবজীপুর বাজারে যাওয়ার সময় ইউনিয়ন পরিষদের কাছে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে শরীর থেকে বাম পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে রাখে।
এসময় মিঠুর চিৎকারে স্থানীয়রা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এঘটনায় রাতেই মিঠুর বাবা খুবজীপুর গ্রামের ছাইদুল বাদি হয়ে মিঠুর ফুপাত ভাই বাবু মণ্ডলসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
জানা গেছে, আহত মিঠুর বিরুদ্ধে আপন ফুপা জালালকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা, আপন নানা মমিন ম-লকে গলা কেটে হত্যা, মোজাম ডাকাতকে হাত-পা কাটা মামলাসহ এক নারীকে গলা কেটে হত্যা এছাড়াও অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ প্রায় ১২টি মামলা রয়েছে।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে মিঠুর চাচা রফিকুলের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মিঠুর বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার লোকজন রাতেই বাড়িতে লুটপাটসহ রফিকুলের বাড়ি তালাবদ্ধ করে পরিবারটিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। রবিবার সকালে পুলিশকে গিয়ে পরিবারটিকে উদ্ধার করেছে।
মিঠুর পিতা ছাইদুল ইসলামের অভিযোগ, পারিবারিক রেষারেষির জেরে যোগেন্দ্রনগর গ্রামের রাজু মন্ডল, রফি, শফি, বাবুর সহযোগিতায় কুপিয়ে তার ছেলে মিঠুর পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অভিযুক্ত বাবু মন্ডল যোগেন্দ্রনগর গ্রামের জালাল মন্ডলের ছেলে। তারা পরস্পর আত্মীয়। ঘটনার পর থেকে বাবু মন্ডল ও তার সহেযাগীরা পলাতক থাকায় তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, আহত মিঠুুর বাম পা হাটুর নিচ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
মিঠুর চাচা রফিকুল ইসলাম বলেন, তার মেয়েকে জোর করে বিয়ে করতে চাচ্ছিলেন ভাতিজা মিঠু। কিন্তু সন্ত্রাসী প্রকৃতির ও মিঠুর নামে হত্যাসহ একাধিক মামলা থাকায় বিয়েতে সম্মত ছিলেন না তিনি। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে রেষারেষি চলছিল। মিঠুর পা কর্তনের পর থেকে সন্দেহের বসে তার বাড়িতে হামলা লুটপাট ও তালা ঝুলিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছেন মিঠুর বাবা।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, আহত মিঠুর নামে হত্যাসহ প্রায় ১২ মামলা রয়েছে। তার বাম পা কাটা অবস্থায় খুবজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।