লিবিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের হাতে নিহত ২৬ বাংলাদেশিদের মধ্যে একজন যশোরের রাকিবুল ইসলাম (২৩)। সে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের খাটবাড়িয়া গ্রামের ইসরাইল হোসেনের ছেলে।
নিহত রাকিবুলের বড় ভাই সোহেল রানা জানান, বাংলাদেশ থেকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী লিবিয়ায় যায় রাকিবুল। সেখানকার বেংগাজী শহরে একটি তেল কোম্পানীতে চাকুরী নেয় সে। দু’মাস চাকুরী করার পর সেখানকার বাংলাদেশি দালাল আব্দুল্লাহর মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে রাজধানী ত্রিপলীতে যাওয়ার জন্য রওনা দেয় ১৫ মে।
ত্রিপলী শহর থেকে ১০০ কি মি দুরে মিজদাহ শহরতলী থেকে বাঙালি সহ বেশ ক’জন বিদেশী তাদের অপহরণ করে একটি এলাকায় আটকে রাখে। পরে গত ১৮ মে প্রথম তারা ১২০০০ মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দাবি করে নিহতের বড় ভাই সোহেল রানাকে ফোন দেয়।
মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করতে সোহল রানা রাজি হলে তারা দুবাইতে টাকা পাঠানোর জন্য বলে। কিন্ত নিহতের বড় ভাই বাংলাদেশে টাকা দিতে চাইলে অপহরনকারীরা তা প্রত্যাখান করে দুবাইতে ডলার পাঠানোর জন্য বারবার চাপ সৃষ্টি করে বলে জানান সোহেল রানা।
মুক্তিপণ নিয়ে আলাপচারিতার একপর্যায়ে গত ২৭ তারিখে অপহরনকারীরা রাকিবুল ইসলাম সহ ২৬ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করে। নিহতের বড় ভাই আরো জানান অপহরনকারীদের সাথে ৪/৫ জন বাঙালি রয়েছে, তারাই সার্বক্ষনিক তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি ও চার আফ্রিকান ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির মুখোমুখি করার নির্দেশ দিয়েছে।
ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিজদাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। সেখানে একটি গোপন স্থানে ৩৮ বাংলাদেশি নাগরিককে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। তাঁদের হত্যা করা শুরু করা হলে তাঁদের মধ্যে একজন সেখান থেকে পালিয়ে যান। প্রাণে বেঁচে যাওয়া ওই ব্যক্তি লিবিয়ায় বাংলাদেশ মিশনকে এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে জানিয়েছে।