Breaking News

মাদকবিরোধী সভা করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাদক কারবারিদের হামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সেজামূড়া গ্রাম দিয়ে মাদক পাচার করতে দেওয়া হবে না—গ্রামবাসীরা এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই মাদক বিরোধী সভার উদ্যোগ গ্রহণকারী স্থানীয় বাজারের এক ব্যবসায়ীর হাত-পা ভেঙে দিয়েছে পাচারের সঙ্গে জড়িত একটি চক্র।

আহত আবু নাছের (৩৫) এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় বিজয়নগর থানায় মামলা হয়েছে।

আবু নাছের বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে মাদক পাচারে জড়িত উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু কাউসার ভূঁইয়ার চক্রের বিরুদ্ধে গত ২৩ মে বিকেলে গ্রামের ৬০-৬৫ জন মুরুব্বি ও যুবকদের নিয়ে স্থানীয় হুমায়ূন কবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাদকবিরোধী সভা করা হয়। সভা থেকে গ্রামের ওপর দিয়ে মাদক পাচার করতে দেওয়া হবে না বলে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়।

তিনি জানান, পরদিন ২৪ মে সকালে দাদী মারা যাওয়ায় তিনি কাফনের কাপড় কিনতে আউলিয়া বাজারে গিয়েছিলেন। কাপড় কিনে ফিরবার পথে নজরপুর গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে ওত পেতে থাকা কাউসারসহ ১২/১৪ জন গতিরোধ করে তাকে লোহার রড ও শাবল দিয়ে বেধড়ক পেটান। তিনি লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা মৃত ভেবে পালিয়ে যায়। কাজল নামের এক ব্যবসায়ী তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আউলিয়া বাজারে নিয়ে যাওয়ার পর অন্য ব্যবসায়ীরা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

নাছের বলেন, মাদক পাচারকারী চক্রটির রোষানলে পড়ে আমার হাত ও পা ভাঙল। দাদীর দাফনেও অংশ নিতে পারলাম না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে বিজয়নগর কখনোই মাদকমুক্ত হবে না।

পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও একই গ্রামের বাসিন্দা বাসির মিয়া বলেন, যুবলীগের নাম ভাঙিয়ে আবু কাউসার ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচার করছে। এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় সে দুই বছর আগে ১৫ আগস্ট আমার ওপর হামলা চালায়। ওই দিন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান শেষে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় গোয়ালনগর সড়কে কাউসার ও তার বাহিনীর লোকেরা আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় মামলা করা হলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা চাপ সৃষ্টি করে ঘটনাটির আপোষ-মীমাংসা করেন। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের ছত্রছায়ার কারণে কাউসারের বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নিতে পারে না।

পাহাড়পুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মো. আনিছুর রহমান বলেন, কাউসারের মাদক ব্যবসা ও নানা অপকর্ম সম্পর্কে সবাই জানেন। তবুও তার বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নেয় না। ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলার কারণে সে অপকর্ম করে পার পেয়ে যাচ্ছে। তার লাগাম টেনে ধরা উচিত।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবু কাউসার ভূঁইয়া বলেন, ‘নাছের আমার প্রতিবেশী। তার সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। আমার চাচাত ভাইদের সঙ্গে সেদিন তার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আমি সেখানে ছিলাম না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, সেজামূড়া গ্রামের ঘটনায় আহত নাছেরের বাবা আবু শামা ২৪ মে রাতে কাউসারকে প্রধান আসামি করে নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

Check Also

জুলুম থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

মহানবী (সা.) যেকোনো ধরনের জুলুম থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *