করোনা দুর্যোগকালে ক্ষেতের ধানগুলোই আশা দিচ্ছিল কৃষক রুস্তম আলীকে (৪৮)। আর কয়েক দিন পরেই ঘরে তোলার কথা ছিল ধান। কিন্তু পূর্ববিরোধের জেরে তাঁর সব ধান জোর করে কেটে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ফসল হারিয়ে একেবারে পথে বসে গেছেন তিনি। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সিদলা ইউনিয়নের গড়মাছুয়া গ্রামে গত রবিবার এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ৩০ শতাংশ জমি নিয়ে রুস্তম আলীর সঙ্গে একই গ্রামের তারু মিয়ার বিরোধ চলে আসছিল। তবে ধান চাষের সময় বাধাও আসেনি প্রতিপক্ষের তরফ থেকে। তিনি ধারকার্জ করে এই ৩০ শতক জমিতে এবার বোরো ধান চাষ করেছিলেন। ধান পেকে যাওয়ায় এগুলো কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গত রবিবার দুপুরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমির সব ধান কেটে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষ তারু মিয়া ও তার লোকজন। এ সময় কৃষক রুস্তম আলীর বাবা ধান কাটতে বাধা দিলে তাঁকে মারধর করা হয়।
ভুক্তভোগী রুস্তম আলী জানান, এ জমিটুকু তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। ৬০ বছর ধরে তাঁর বাবা-চাচারা এটি ভোগদখল করে আসছেন। কিছুদিন আগে তারু মিয়া এ জায়গার মালিকানা দাবি করলে স্থানীয়ভাবে একটি সালিস হয়। তারু মিয়া জমির কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তাঁকে ভোগদখলের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। কিন্তু ধানগুলো ঘরে তোলার আগেই তারা কেটে নিয়ে গেল।
এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ তারু মিয়ার ছেলে নাঈম ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের জমির দখল না ছাড়ায় জমির ধান কেটে নিয়ে এসেছি।’
এ বিষয়ে সিদলা ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষক যেন তার ধান ফিরে পায় সে চেষ্টা করা হচ্ছে।’ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল ইসলাম নুরু মিয়া বলেন, ‘কিছুদিন আগে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছিল। করোনার সময় এভাবে অন্যের ধান কেটে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি।’ হোসেনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’