ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় আল্ট্রাসনোগ্রামে কন্যাসন্তান হবে জানতে পেরে নির্যাতনের পর স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী শাহাদৎ হোসেনের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে ময়মনসিংহ শহরের একটি হাসপাতালে জান্নাতুল ফেরদৌসের পরীক্ষা করান শাহাদৎ। পরদিন মঙ্গলবার সকালে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা জান্নাতুল স্বামী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় অভিযোগ দেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভালুকার জামিরদিয়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে শাহাদৎ হোসেনের সঙ্গে এক বছর আগে পার্শ্ববর্তী গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার বলদী টানপাড়ার তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এজন্য তাঁকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো।
এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হন জান্নাতুল। তখন স্বামীর পরিবার অজুহাত দাঁড় করায় ছেলে না হলে বাড়ি থাকতে দেওয়া হবে না। সোমবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করে শাহাদৎ কন্যাসন্তানের বিষয়ে নিশ্চিত হন। এর পরই বাড়ি ফিরে নির্যাতন করে বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা এনে দিতে বলেন। জান্নাতুল রাজি না হওয়ায় বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বাবাসহ পরিবারের লোকজন জান্নাতুলকে ভালুকা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার রাতে ভালুকা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন জান্নাতুল।
অভিযোগের বিষয়ে শাহাদৎ হোসেন জানান, তাঁর স্ত্রীর স্বভাব ভালো না। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরও পরিবর্তন হয়নি; বরং সংসার করবে না বলে প্রায়ই হুমকি দেয়। ঘটনার দিন ভোরে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভালুকা মডেল থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, দু’পক্ষই অভিযোগ দিয়েছে। তাঁদের থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। সমঝোতা না হলে অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।