বিএনপি যে ২৫টি দলের সঙ্গে আন্দোলন নিয়ে কথা বলেছে তার মধ্যে জামায়াতে ইসলামী নেই৷ আলাদা করে দলটির সঙ্গে কোন আলোচনা হয়নি বলেও জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷
সরকার পতনের আন্দোলনে বিএনপি আগের মতো আর ব্যর্থ হবে না বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ তার মতে বাংলাদেশে বর্তমানে যে প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে তাতে জনগণ আরো বেশি করে এখন তাদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হচ্ছে৷ ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ টকশো-তে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জনগণ এখন নিজেরাই সংকটে৷ নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে গেছে তাদের৷ সেজন্য জনগণের অংশগ্রহণটা এখন অনেক বেশি হচ্ছে৷ তারা মনে করছে এখন এই সরকারকে যদি সরানো না যায় তাহলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না, এই দেশের অস্তিত্ত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে৷ যে কারণে তারা অনেক বেশি সম্পৃক্ত হচ্ছে৷’’
তবে তিনি দাবি করেন করেন, সাম্প্রতিক সময়ে দলটির ২০ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সরকারের নির্দেশে পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়েছে৷ ‘‘এখন পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ বিএনপির প্রতিটি ইউনিটের এক্সিকিউটিভ বডির তালিকা পুলিশকে দেয়া হচ্ছে৷ সেখান থেকে গায়েবি মামলা করা হয়৷ মামলা একই শব্দ, গৎবাধা কথা দিয়ে মামলাগুলো করা হয়৷ …এই মামলাগুলো পুরোপুরিভাবে গণতন্ত্রকে, বিরোধী দলকে নিমূর্ল করার জন্য করা হচ্ছে, এটা নজিরবিহীন,’’ বলেন এই রাজনীতিক৷
রাজশাহীতে বিভাগীয় সমাবেশের আগের দিন বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, সমাবেশে লোক সমাগম ঠেকাতে সড়ক ও নৌপথের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার৷ তারপরও আগের দিন লক্ষাধিক মানুষ জড়ো হয়েছেন শহরটিতে৷
মির্জা ফখরুলে কাছে প্রশ্ন ছিল ২০ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছি৷ আমরা যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে সেই আন্দোলন শুরুর কথা বলেছি৷ আমরা ইতিমধ্যেই প্রায় ২৫টা দলের সঙ্গে কথা বলেছি, তার মধ্যে বাম আছে, ডান আছে, ২০ দলও ছিল৷ তাদের সঙ্গে আমাদের যে আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে শেষ হয়ে গেছে সেটা হলো আমরা একমত হয়েছি যে যুগপৎ আন্দোলন করব৷’’
বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির এখন সম্পর্ক নেই৷ এই বিষয়েও প্রশ্ন ছিল বিএনপি মহাসচিবের কাছে৷ তিনি বলেন, ‘‘গত চার বছর ধরে আমরা নিজেরা বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি এবং সেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি৷ আমরা যে দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছি সেই দলগুলোর কথা আমরা সবাই জানি৷ জোটের কথা আমরা এখন আর বলছি না এবং জোটের কথা সামনে আসছেও না৷ …রাজপথে আন্দোলনের ধারার মধ্য দিয়েই সিদ্ধান্ত হবে যে আমরা ভবিষ্যতে জোট করব কী করব না বা আমরা একসাথে যাব কী যাব না৷ সুতরাং এখন জামায়াত প্রসঙ্গ একেবারে অপ্রাসঙ্গিক এই মুহূর্তে৷’’
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা জামায়াতের সঙ্গে প্রকাশ্যে কোন রাজনৈতিক আলোচনা করিনি এবং সংলাপও করিনি৷’’
১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশ নিয়ে তিনি বলেন তারা সরকারের কাছে ভেন্যু হিসেবে শুধু পল্টনের জন্যই আবেদন করেছেন৷ ১০ তারিখ বিএনপির প্রথম দফার আন্দোলন শেষ হবে৷ দ্বিতীয় দফায়, সরকারের পদত্যাগের জন্য নতুন দাবি দাওয়া নিয়ে বিএনপি জনগণের সামনে আসবে বলে জানান তিনি৷
Right