সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
বিএনপি সরকারে থাকাকালে বরিশালকে বিভাগ করে দিয়েছিল উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বরিশালে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিকেএসপি করেছিলাম। আর এই সরকার দিয়েছে দুর্ভিক্ষ। বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করে এখন বৈশ্বিক সংকট, ডলারের সংকট, রাশিয়ার যুদ্ধের কথা বলছে তারা। এখন দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন কেন? যখন বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন তখন এই কথা মনে ছিল না। আমাদের কাছে হিসাব আছে কত কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে।’
শনিবার (০৫ নভেম্বর) দুপুরে বরিশালে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস পার্ক) বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, দলের নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে এ সমাবেশ করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণের কথা বললেও বাস্তবে কোনও পরিবর্তন হয়নি। বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে তারা। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট করে যাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা নেই তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এমন একটি খাতও পাবেন না যেখান থেকে তারা চুরি করেনি। প্রতিটি খাত থেকে চুরি করেছে তারা। এখন দুর্ভিক্ষের কথা বলছে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবে। ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। এখন চালের কেজি ৬০-৭০ টাকা। চাকরি দিয়েছে আওয়ামী লীগের ছেলেদের। এজন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নিয়েছে তারা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বর্গি এলো দেশে। বর্গি হলো দস্যু। যারা সবকিছু লুট করে নিয়ে যেতো। আজ আওয়ামী লীগ বর্গির রূপ নিয়েছে। আওয়ামী লীগ একবার ভোট চুরি করেনি, যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই ভোট চুরি করে। আওয়ামী লীগের চরিত্রে দুটি জিনিস আছে। একটি চুরি, আরেকটি সন্ত্রাস। সন্ত্রাস আর চুরি করবে এটাই তাদের কাজ। এই দুটি না হলে তাদের চলে না। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। এখন নতুন করে ভোট চুরি ফায়দা আঁটছে। নতুন বুদ্ধি এঁটে নতুন কমিশন দিয়ে আবারও কৌশলে ভোট চুরির চিন্তা করছে। কিন্তু এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। সে সরকার নির্বাচনের কৌশল গঠন করবে।’
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেল প্রমুখ।