বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগে পাল্টা হামলা করা হয়েছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর। এসময় তারা যুবলীগ নেতাকে আহত করা ছাড়াও মোটরসাইকেল, আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতাকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।
বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগদানের জন্য সড়কপথে যাওয়ার সময় গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডে শনিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিএনপি নেতাদের হামলায় যুবলীগ নেতা আহত হওয়ার খবরে মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুব হোসেন বলেন, নাশকতার আশঙ্কায় মাহিলাড়া দলীয় কার্যালয় পাহারায় ছিল কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মী। শনিবার খুব সকালে বিএনপির সমাবেশে যাওয়া একটি গাড়ির বহর থেকে তাদের ওপর হামলা করা হয়। গাড়ির বহরে থাকা বিএনপির সশস্ত্র ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাসেল রাঢ়িসহ অন্তত ১৫ জনকে আহত করেছে। এ সময় তারা মাহিলাড়া বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ভাঙচুর করে। এসময় বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা।
গুরুতর আহত মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিলাশ কবিরাজ জানান, মাহিলাড়া বাজারে বিএনপি নেতার গাড়িবহর থামিয়ে সাধারণ মানুষকে মারধর শুরু করলে প্রতিবাদ করেন স্থানীয়রা। এসময় স্থানীয়দের ওপর চড়াও হয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসময় বিএনপির ক্যাডাররা আওয়ামী লীগের অফিস ঘর ভাঙচুর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছবি ভাংচুর করে।
বরিশাল জেলা বিএনপির সদস্য ও গৌরনদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহির সাজ্জাত হান্নান শরীফ বলেন, দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বরিশালে সমাবেশে যোগ দেওয়ার উদ্দেশে ঢাকা থেকে একটি গাড়ি বহর নিয়ে বরিশালের পথে রওনা দেন। গাড়ির বহরটি শনিবার সকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে গৌরনদীর মাহিলাড়া বাজার অতিক্রম করছিল। তখন সেখানে থাকা সরকারি দলের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতার বহরটিকে ঘিরে ভাঙচুর করে কয়েকটি গাড়ি। এসময় ঢাকা দক্ষিণের অন্তত ১০ জন বিএনপির নেতাকর্মী আহত হন।
বিএনপিও পাল্টা হামলা করেছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা আত্মরক্ষার্থে হয়ত হামলা প্রতিহত করতে পারেন। তবে বিএনপি কোনো হামলা করেনি।
গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গৌরনদী পৌরসভার মেয়র মো. হারিছুর রহমান বলেন, বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে ইশরাকের নেতৃত্বে মাহিলাড়া বাজারে বিনা উসকানিতে এলোপাতারি হামলা চালিয়ে দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনা তাদের পূর্বপরিকল্পিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে। তাছাড়া এই ঘটনায় দুইজনকে আটকও করা হয়েছে।