আফগানিস্তানের বিচার ব্যবস্থায় পূর্ণ শরিয়া আইন প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। রবিবার টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের। তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দেশটির বিচার ব্যবস্থায় শরিয়া আইন প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন।
তার নির্দেশনাটিই টুইটে জানিয়েছেন জাবিহুল্লাহ। শরিয়া আইনে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, পাথর নিক্ষেপে হত্যা, চাবুক মারা এবং চোরদের হাতের কব্জি কেটে দেওয়ার বিধান রয়েছে। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, তালেবানের উচ্চপদস্থ নেতাদের একটি বৈঠকের পর আখুন্দজাদা ‘বাধ্যতামূলক’ এ নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি টুইটে আরও জানিয়েছেন, আখুন্দজাদা নির্দেশ দিয়েছেন, ‘চোর, অপহরণকারী এবং রাষ্ট্রদ্রোহীদের মামলাগুলো সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করতে হবে। এসব মামলায় অপরাধ (হুদুদ এবং কিসাস) বিবেচনা করে ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী বিচার করতে হবে। হুদুদ সেসব অপরাধকে নির্দেশ করে, যেগুলোতে ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী, নির্দিষ্ট সাজা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে কিসাস নির্দেশ করে বদলা নেওয়ার বিষয়টি (চোখের বদলে চোখ)।
হুদুদের মধ্যে রয়েছে ব্যভিচার, মদ্যপান, চুরি, অপহরণ, ডাকাতি, ধর্মত্যাগ এবং দ্রোহিতার মতো অপরাধগুলো। কিসাসের অন্তর্ভুক্ত হত্যা, ইচ্ছাকৃত আঘাতের মতো অপরাধগুলো। কিসাসভুক্ত অপরাধগুলোতে ভিক্টিমের পরিবার চাইলে ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে অপরাধীকে ক্ষমা করে দিতে পারবেন। এদিকে আশরাফ গনি সরকারকে হটিয়ে দিয়ে ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। এরপর হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার দিক নির্দেশনামূলক কোনো ছবি বা ভিডিও প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু তিনি কান্দাহার থেকে ডিক্রি জারি করে শাসন চালিয়ে আসছেন।
তালেবান প্রথমবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে ১৯৯৬ সালে। এরপর ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের সামরিক অভিযানে ক্ষমতাচ্যুত হয় তারা। ওই সময় কঠোর শাসন চালিয়েছিল তারা। ২০২১ সালে দ্বিতীয়বার আবারও ক্ষমতা দখল করার পর তালেবানের নেতারা ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা এবার আর এতো কঠোরতার সঙ্গে শাসন কার্যক্রম চালাবেন না। কিন্তু ধীরে ধীরে আবারও বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ শুরু করেছে গোষ্ঠীটি।